ঘটনার ১০ দিন পরও গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার জট খোলেনি। গত ৩১শে ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের হাতে এমপি লিটন নিহত হওয়ার পর পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, পিবিআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা খুনের রহস্য উদঘাটনসহ খুনিদের গ্রেপ্তারে মরিয়া হয়ে ওঠে। এ পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন থানায় ৬১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে ৭ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে লিটন হত্যাকাণ্ডের জট এখনো তিমিরেই রয়ে গেছে। এদিকে পুলিশ সূত্র থেকে এমপি লিটন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রকৃত কোনো তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না। তারা তদন্তের স্বার্থে এখনো বিষয়টি চাপা রাখছেন। এমনকি আটক ও গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো সত্ত্বেও তাদের সংখ্যা, মামলার ধরন বা নাম জানাতেও অনীহা প্রকাশ করছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, আটকদের মধ্যে অনেকেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ও অর্থের জোগানদাতা। যাদের রিমান্ডে আনা হয়েছে তাদের কাছ থেকে এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের অনেক কিছুই জানা যাবে। থানার অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান, রিমান্ডে থাকা ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যার বিষয়ে ভালো তথ্য পাওয়া যাবে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পরও ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে না পারায় উপজেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। জামায়াত নেতা রিমান্ডে: এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার সুন্দরগঞ্জ পূর্ব থানা জামায়াতের আমির সাইফুল ইসলাম মণ্ডলকে ৬ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে গাইবান্ধার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সুন্দরগঞ্জ) বিচারক মো. মইনুল হাসান ইউসুফ শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সাইফুল ইসলাম মণ্ডল চ্যাংমারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের আবদুস সাত্তার মণ্ডলের ছেলে। শোকসভা, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল: এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের পর থেকে উপজেলায় শোকসভা, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বামনডাঙ্গায় এমপি লিটনের নিজবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকাবাসীর আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এরপর শহীদ লিটন মঞ্চে প্রতিবাদ সভায় সমেস উদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শহিদুল ইসলাম শহীদ, আরিফুল ইসলাম রাসেল, ফয়সাল, নাদিম, আশরাফুল, মোসকেকুল ইসলাম বিয়াল, ছামিউল ইসলাম ছামু, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। বক্তারা লিটনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এছাড়া বামনডাঙ্গা বহুমুখী জনকল্যাণ সংঘের আয়োজনে শোকসভা প্রভাষক হাদিউল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মাহবুর রহমান খান, প্রভাষক আবদুল্লাহিল রাসেল, আইয়ুব আলী, মনোয়ারুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন মুক্তি, আতিবর রহমান প্রমুখ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.