মেলায় কাজ করা অনেক আনন্দের। সারাদিন নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে কথা হয়। এখান থেকে অনেক কিছু শিখা যায়। কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা সিটি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নিল ইসলাম। তিনি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় কোয়ালিটি আইসক্রিমের স্টলে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। পরিবারের সম্মতিতে পরিচিত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে এসে মেলায় কাজ করছেন। এর আগে তিনি আইসিটি ফেয়ার মেলায় আইক্যাবে কাজ করেছেন। স্বপ্নিল আরো বলেন, আমাদের সহপাঠীদের আরো অনেকেই চেষ্টা করেছিল কিন্তু কাজের সুযোগ পায়নি। তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ৪র্থ বছরের ছাত্র মো. হৃদয় বলেন, আমিতো গত ৫ বছর ধরে ফ্রুটিকা, ইসলামিক জিনিয়াস, আইক্যাব, মজো, স্বপ্নসহ আরো অনেক ইভেন্টের কাজ করে আসছি। স্বাধীনভাবে এসব কাজ করতে অনেক ভালো লাগে। মেলায় একসাথে অনেক মানুষের সমাগম হয়। আমরা সারাদিন খুব মজা করে কাজ করি। মেলা শেষে আমাদের কাজের উপর সম্মানির সঙ্গে গিফটও দেয়া হবে। শিমলা বড়ুয়া অহনা চট্টগ্রাম এমইএস কলেজে পড়ালেখা করেন। এসএসসি শেষ করার পর থেকে তিনি ইভেন্টের কাজ করেন। ৪ বছর ধরে গেইম আইটেম, স্কুল ইভেন্ট, ফুড আইটেমসহ প্রাণের বিভিন্ন ইভেন্টে কাজ করছেন। আগে কাজ করতেন চট্টগ্রামে। অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল ঢাকার বাণিজ্যমেলায় কাজ করবেন। এ বছর সে স্বপ্ন পূরণ হলো। বিডি জবস এ বাণিজ্যমেলায় বিক্রয়কর্মী নিয়োগের সার্কুলার দেখে আবেদন করেন। পূর্ব-অভিজ্ঞতা থাকার কারণে নির্ধারিত তারিখে পরীক্ষা দিয়ে বাছাই পর্বে ঠিকে যান। পরে ট্রেনিং এর মাধ্যমে কাজ শিখেন। এখন তিনি প্রাণ গুঁড়া মসলার একটি স্টলে কাজ করেন। মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপকালে শিমলা বড়ুয়া বলেন, প্রাণ এখন ভালো ব্র্যান্ড। মেলায় প্রাণের পণ্যের উপর ক্রেতাদের অনেক চাহিদা। সারাদিন আমরা অনেক কাস্টমার ড্রিল করি। এখানে কাজের একটি ভালো পরিবেশ আছে। আমরা নতুন নতুন অনেক কিছু শিখছি যা আমাদের কর্মজীবনে অনেক কাজে লাগবে। তিনি বলেন, আমি সবসময় স্বাধীনভাবে কাজ করতে পছন্দ করি। এখানেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। শুধু স্বপ্নিল ইসলাম আর অহনা নন, প্রতিবছরই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের পণ্য বিক্রয় ও প্রদর্শনীর জন্য পার্টটাইম কর্মী নিয়োগ দেয়। এ বছর মেলায় বিভিন্ন কলেজ ইউনিভার্সিটির প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী কাজ পেয়েছেন। অলিম্পিকের ব্যান্ড ম্যানেজার সৈয়দ সগির মাহমুদ বলেন, গত তিন বছর ধরে আমরা মেলায় অংশগ্রহণ করছি। স্মার্ট, সাবলীলভাবে কথা বলা, ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা এবং সর্বোপরি শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করে বিক্রয়কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর তাদের ট্রেনিং এর মাধ্যমে দক্ষ করে তুলা হয়। তবে অভিজ্ঞদের বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। মাসে ২১ হাজার থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত বেতন দেয়া হয়। পাশাপাশি বিক্রয়কর্মীদের ভালো কাজের ভিত্তিতে প্রতি সপ্তাহে উপহার তুলে দেয়া হয়। এতে করে তারা কাজ করার স্পৃহা পান। ট্রান্সকম কনজ্যুমার প্রডাক্টস এর কুরকুরে চিপসের স্টলের সামিনা ইসলাম বলেন আমরা সারাদিন ধুলাবালুর মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করি। মেলায় ভাল ওয়াশরুম নেই। বাণিজ্য মেলার সবচেয়ে বড় প্যাভিলিয়ন ওয়ালটনে কাজ করছেন ২৫ জন বিক্রয়কমী। প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মো. শফিকুল আলম বলেন, প্রতিবছর ওয়ালটন কলেজ ইউনিভার্সিটির ছেলে মেয়েদের পার্টটাইম কাজের সুযোগ করে দেয়। ভাল কাজের ফলস্বরূপ এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ওয়ালটন তাদের স্থায়ীভাবে কাজের সুযোগ করে দেয়। ইন্টারনেটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং পূর্বের কাজের পরিচিতদের মধ্যে থেকে বিক্রয়কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। পরে তাদের ৪দিন ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.