বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সময়-সুযোগমতো আবারও রাজপথে আসবে বিএনপি। তিনি বলেন, ‘একটা কথা আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারি, উই আর কমিটেড উইল ফাইট টু দ্য লাস্ট।’ গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন কৌশলের ব্যাপার। রাজনীতিতে উত্থান-পতন আছে, কখনো আমার ভালো সময় যাবে, কখনো খারাপ সময় যাবে। আমরা প্রতিবার রাজপথে আসছি, সময়মতো-সুযোগমতো অবশ্যই আবারও রাজপথে আসব।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য, শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা সংগ্রাম করব, লড়াই করব। সেই লড়াইয়ে সফল হব, ইনশা আল্লাহ।’ এর আগে দেওয়া বক্তব্যে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির রাজপথে না থাকার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়ার ওপর সব দায়দায়িত্ব দিয়ে ভুল করছে।’ এর জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ওনার কথাগুলো আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে নিয়েছি। তবে একটা কথা না বললেই নয়। বিএনপি গণতান্ত্রিক শক্তি। আমরা লড়াই করছি একটা ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে। এই এক বছরে আমাদের হাজারের ওপরে নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, পুলিশ গুলি করে মেরেছে। পাঁচ শর ওপরে আমাদের নেতা-কর্মী গুম হয়ে গেছে, হাজার হাজার নেতা-কর্মী পঙ্গু হয়েছে, ক্রাচে ভর করে তারা এখনো আসে, কেউ রিকশা চালায়।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এত কিছুর পরও তারা আমাদের একজন নেতা-কর্মীকেও বিচ্যুত করতে পারেনি। এখানেই বিএনপির শক্তি, এখানে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শক্তি।’ বিএনপির মহাসচিব খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি তাঁকে অভিবাদন জানাই। বাংলাদেশে কয়জন নেতা আছেন, যাঁরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন? তিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন, দেশের প্রয়োজনে রাজনীতিতে এসেছেন। দীর্ঘ নয় বছর রাজপথে সংগ্রাম করেছেন, ক্ষমতায় বসে সংগ্রাম করেননি। তারপরে স্বামী হারিয়েছেন, পুত্র হারিয়েছেন, আরেক পুত্র নির্বাসিত। তাঁকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, এখন প্রতি সপ্তাহে আদালতে গিয়ে মিথ্যা মামলায় তাঁকে হাজিরা দিতে হয়।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশে এখন বিএনপি মানেই হচ্ছে আসামি। বিএনপি মানেই হচ্ছে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে অথবা জেলখানায় থাকতে হবে। বিএনপির মানেই হচ্ছে, তাকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হবে অথবা এলাকা থেকে পালিয়ে অন্য জায়গায় থাকতে হবে।’ ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আবদুল হাই শিকদার রচিত জ্যোতির্ময় জিয়া এবং কালো মেঘের দল গ্রন্থের চতুর্থ সংস্করণের প্রকাশনা উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন। আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, লেখক আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.