চলচ্চিত্রে আশনা হাবিব ভাবনার শুরুর গল্পটা খুব বেশি দিনের নয়। ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ ছবির মধ্য দিয়ে অভিষেক হয় তার। এখনো ছবিটি মুক্তির মিছিলে যোগ দেয়নি। এরই মধ্যে নতুন আরেকটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির কাজ শেষ করেছেন ভাবনা। অনিমেষ আইচের পরিচালনায় এ ছবির নাম ‘বরষা’। গত ১৩, ১৪ ও ১৫ই জানুয়ারি ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে এর শুটিং শেষ হয়েছে। এ চলচ্চিত্রে ভাবনা প্রথমবারের মতো সংগীত তারকা ও অভিনেতা তাহসানের সঙ্গে জুটিবেঁধে অভিনয় করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে ভাবনা বলেন, তাহসান ভাইয়ের সঙ্গে এবারই প্রথম অভিনয় করলাম। অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি, তিনি সত্যিই অসাধারণ একজন মানুষ। কাজটি নিয়ে তিনি বেশ সিরিয়াস ছিলেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আশা করছি পর্দায় সবার ভালো লাগবে ছবিটি। ভাবনা আরো জানান, আসছে ভালোবাসা দিবসে ‘বরষা ছবিটি মুক্তি দেয়া হবে। এ মুহূর্তে ভাবনা ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ ছবির জন্যও মুখিয়ে আছেন। অনিমেষ আইচের পরিচালনায় এ ছবিটি এরই মধ্যে মুক্তির জন্য সেন্সরে দেয়া হয়েছে। গত ১২ই জানুয়ারি সেন্সরে জমা পড়ে এটি। শৈশব থেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে পরিচয় অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার। তার বাবা একজন মঞ্চ অভিনেতা ও নির্মাতা। সে সুবাদে ছোটবেলায় ক্যামেরার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে ভাবনার। মাত্র দু’বছর বয়সেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে ২০০৮ সালে মূল অভিনেত্রী হিসেবে শোবিজ অঙ্গনে তার অভিষেক ঘটে। ভাবনা অভিনীত প্রথম নাটক ‘নট আউট’। এ নাটকে নিজেকে একজন দক্ষ অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন। এরপর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ফার্স্ট ডেট’ নাটকে অভিনয় করেন। নাটকটি প্রচারের পরই বেশ আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। অল্প দিনেই এই লাস্যময়ী অভিনেত্রী তার সাহসিকতা ও মেধা দিয়ে দর্শক-নির্মাতাদের নজরে আসতে সক্ষম হন। ভাবনা বলেন, আমি অভিনয়ের প্রতি বেশি মনোযোগী। তাই নাটকের ক্ষেত্রে গল্প ও নির্মাতা বাছাই করে কাজ করি। তবে আমাকে রোমান্টিক চরিত্রেই অভিনয় করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। যেকোনো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ভাবনা তার অভিনয়ের জাদু দিয়ে বেশকিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক দর্শককে উপহার দিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- ‘চৌধুরী ভিলা’, ‘অচেনা প্রতিবিম্ব’, ‘শূন্য সমীকরণ’, ‘চেনা মুখ অচেনা মুখ’, ‘জয় পরাজয়’, ‘সোনার সুতা’ প্রভৃতি। একসময় ধারাবাহিক নাটকে দেখা গেলেও গত চার বছর হলো এ ব্যস্ততা নেই ভাবনা। কিন্তু কারণ কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে বেশ কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। কিন্তু চার বছর ধরে কোনো সিরিয়ালে কাজ কছি না। কারণটা খুব স্বাভাবিক। আমাদের ধারাবাহিকগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ১৫ পর্ব পর্যন্ত ঠিক থাকে। এরপর গল্প হারিয়ে যায়। দর্শক আর কিছুই খুঁজে পান না। এর নেপথ্যে রয়েছে স্বল্প বাজেট। যে বাজেট পাওয়া যায় সেটা দিয়ে ভালো গল্প থাকলেও অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নেয়া যায় না। তাছাড়া আমি এমনিতেই বেছে বেছে কাজ করি। অনেক নাটকে কাজ করবো। কিন্তু অভিনয়টা তো করতে পারবো না। সেটা শুধু কাজ করার জন্য করা হবে। আমি বিশ্বাস করি, গড়পড়তা কাজ করে পর্দা থাকতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। অভিনয়ের পাশাপাশি অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রেও দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন ভাবনা। গত কয়েক বছরে তিনি অসংখ্য বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে- গ্রামীণফোন, মোজো, প্রাণ মি. ম্যাঙ্গো, পারটেক্স, রবি ইত্যাদি। একজন অভিনেত্রীই নন, মিডিয়ায় ভাবনার আরেকটি বড় পরিচিতি হলো তিনি নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলায়ই নৃত্যের ওপর নিয়মিত তালিম নিয়েছেন। তখন থেকেই নিয়মিত চর্চা করতেন। এখনো করে যাচ্ছেন। ২০০৩ সালে সেরা নৃত্যশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন। এরপর ২০০৬ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও সেরা নৃত্যশিল্পী হিসেবে পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। এগুলো হচ্ছে- হলদিয়া উৎসব (ভারত) ও ইয়ুথ ফেডারেশন পুরস্কার (মালয়েশিয়া)।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.