সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তার নামে যুক্তরাজ্য যেসব আইন করেছে, তা মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি হুমকি টেনে আনছে। ইউরোপের অন্য দেশগুলোও উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সমস্যা মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের দেখানো পথই অনুসরণ করছে। এতে করে ইউরোপের দেশগুলোতে মানবাধিকার সুরক্ষার ঐতিহ্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
ইউরোপের ১৪টি দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তুলনামূলক ওই প্রতিবেদনটি গত মঙ্গলবার প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি। ৭০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তার নামে যুক্তরাজ্য এমন সব ক্ষমতার প্রয়োগ শুরু করেছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিষ্ঠুর। এতে বলা হয়, মানবাধিকার পরিস্থিতিতে পশ্চাৎ গমনের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যই ইউরোপকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ‘গণনজরদারি’ (ম্যাস সার্ভেল্যান্স), নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া, মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যাপ্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কিংবা অভিযোগ গঠন ছাড়াই বন্দী করে রাখার চর্চাকে মানবাধিকারের জন্য গুরুতর হুমকি বলে চিহ্নিত করা হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাজ্য থেকে বিতাড়নে সরকার যে ‘কূটনৈতিক আশ্বাস’ (ডিপ্লোমেটিক অ্যাসিউর্যান্স) দেয়, সেটিকে মানবাধিকারের জন্য হুমকি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। নির্যাতনের শিকার হতে পারে—এমন কোনো দেশে কাউকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক আশ্বাসের যুক্তি দিয়ে আদালতের অনুমোদন আদায় করে নিয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাজ্য শাখার প্রধান কেইট অ্যালেন গার্ডিয়ানকে বলেন, জনগণকে অধিকারগুলো পাওয়ার সুযোগ করে দিতে সরকারের উচিত সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; অধিকার ভোগ করার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টির লক্ষ্যে নয়।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি মারাত্মক। এই কারণে কার্যকর সন্ত্রাস দমন আইন জরুরি, যা একই সঙ্গে ন্যায্য ও প্রয়োজনমাফিক হওয়ার দাবি রাখে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.