না, গত ১০ বছরে বার্সেলোনা অজস্র ম্যাচ জিতেছে। এর মধ্যে গড়ে তুলেছিল তাদের সর্বজয়ী স্বপ্নের দলটাও, যেটি এক বছরে ছয় শিরোপার জিতেছে সবগুলো। ট্রেবলই জিতেছে দুবার। কিন্তু এত এত প্রাপ্তির মধ্যেও ছিল একটা হাহাকার। কী এক অভিশাপ যেন। সেই ২০০৭ সালের পর থেকে রিয়াল সোসিয়েদাদের মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরতে পারছিল না বার্সা। অবশেষে প্রায় এক দশক পর আনোয়েতার-অভিশাপ ঘুচিয়ে দিল বার্সা। নেইমারের পেনাল্টি গোলে কাল কোপা ডেল রের শেষ আটের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতে এগিয়ে গেল এনরিকের দল। গত ম্যাচে লিগে লাস পালমাসকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর বার্সা পেল স্বস্তির এক জয়। এই জয় যতটা না তাদের বিখ্যাত আক্রমণভাগের, তার চেয়েও বেশি রক্ষণের। সোসিয়েদাদই চড়াও হয়ে খেলেছে। অবশ্য গোলের সুযোগ তাদের চেয়ে বেশি তৈরি করেছে বার্সা। তবে এনরিকে জানতেন, গোল করার চেয়ে গোল ধরে রাখা কঠিন। এ কারণে বেশি মনোযোগ দিয়েছিলেন রক্ষণে, এর আগে যে রক্ষণের ভুলে বেশ কবার জয় মুঠো থেকে বেরিয়ে গেছে এ মাঠ থেকে। এবার সোসিয়েদাদের অন্তহীন চাপে আর ভাঙেনি বার্সা। বরং বার্সার দ্বিতীয় পছন্দের ডাচ গোলরক্ষক সিলেসেনের লম্বা লম্বা কিকগুলো দিয়েই যেন সেই চাপ উড়িয়ে দিয়েছে। আসলে বার্সাকে এতটাই চাপে রেখেছিল সোসিয়েদাদ, লিওনেল মেসির মেজাজ হারানোর বিরল মুহূর্তগুলো বেশ কবার দেখা গেল কাল। হলুদ কার্ডও দেখেছেন, সেটি অবশ্য ফ্রি কিক নিতে দেরি করায়। মেসি রাগ করছেন, ফ্রি কিকে সময় নষ্ট করছেন, রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদে জড়াচ্ছেন, একটু সুযোগেই ফ্রি কিক আদায় করছেন—এখান থেকেও বোঝা যায়, এ মাঠে জিততে না-পারা কতটা চাপ হয়ে ছিল বার্সার ওপর। একটুর জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বার্সা ক্যারিয়ারে প্রথম লাল কার্ড দেখার হাত থেকেও বেঁচেছেন মেসি। এমন স্নায়ুর লড়াইয়ে ২১ মিনিটে নিজে পেনাল্টি আদায় করে বার্সাকে এগিয়েও দেন নেইমার। এই পেনাল্টি নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, বরং বার্সার আরেকটি পেনাল্টি দাবি নাকচ হয়ে গেছে। বার্সা অবশ্য ১-০ গোলে জিতেই খুশি। বৃহস্পতিবার ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠে এগিয়ে থেকে শুরু করবে গত দুবারের কাপ চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ শেষে এনরিকে বলেছেন, ‘সেমির দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা, যদিও দ্বিতীয় লেগের খেলা যে বাকি সেটাও মাথায় রাখতে হবে। তবে এই জয়টা আপাতত উপভোগ করা যায়, কারণ এ মাঠটা ঐতিহাসিকভাবেই আমাদের জন্য খুব কঠিন।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.