তাজউদ্দীন: বাংলাদেশের অবৈধ আইবুড়ো রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর খুব ঘটা করেই বিয়ে হয় তার৷ পাত্রী হনুফা আক্তার রিক্তা ২০০০ সালে এসএসসি পাশ করেছেন৷ পাত্র-পাত্রীর বয়সের পার্থক্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রসিকতা করেছেন অনেকে৷ সে তালিকায় রয়েছেন তসলিমা নাসরিন ও মিনা ফারাহ।
তারা যে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন ২ বছর পর সে আশঙ্কাই সত্য হলো। যুবতী স্ত্রী অর্থ, যশ ও প্রতিপত্তির জন্য অবৈধ রেলমন্ত্রীকে বিয়ে করলেও যৌবনের চাহিদা মেটাতে তিনি অক্ষম। আর সে কারণেই গোপনে গোপনে চলে পরকীয়া। তাও আবার সাবেক প্রেমিকের সাথে।
বুধবার সকালে রেলমন্ত্রীর বউ এর সাবেক প্রেমিক ঢাকায় দেখা করতে আসলে তাকে মারধর করা হয়। মারধরে আহত প্রেমিক কে বুধবার বিকেলে উদ্ধার করে ধানমন্ডি ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়।
মজিবুল হকের দলীয় ক্যাডাররা প্রাক্তন প্রেমিকের উপর আদিম নির্যাতন চালায়।
এই ঘটনায় আহত প্রেমিক বাদি হয়ে থানায় তাকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করতে গেলে যখন ওসি জানলেন রেলমন্ত্রীর বউ এর সাবেক প্রেমিক তখন সেখানে আরেক দফা মার খায়।
প্রেমিক এর নাম কামরুল ইসলাম এর সঙ্গে প্রেমঘটিত সম্পর্কের জের ধরে মনির হোসেনের (রেলমন্ত্রীর শ্বশুর) দ্বিমতের কারণে এর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
তিনি বলেন, স্থানীয় যুবলীগ নেতা কামরুল রেল মন্ত্রীর বউকে অনেকদিন ধরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে অবৈধ সম্পর্ক বজায় রাখে। পরে রেলমন্ত্রীর প্রস্তাব পেয়ে আর ঠিক থাকতে পারলেন না রিক্তার বাবা।
ওই প্রেমিক অভিযোগ করে বলেন, (রেলমন্ত্রীর ডাক নাম) কাজলের জন্য সে জীবন দিতে রাজী এই বলে সে ব্লেড দিয়ে হাত কাটতে শুরু করেন, অতঃপর সাংবাদিকরা বাঁধা দেয়ায় হাত কাটতে সক্ষম হয়নি।
উল্লেখ্য, অবৈধ রেলমন্ত্রীর বিয়ের পর তসলিমা নাসরিন লিখেছিল, ‘সেদিন টুইটারে লিখেছিলাম আমার বয়ফ্রেন্ড আমার চেয়ে কুড়ি বছরের ছোট। খবরটা লুফে নিলো মিডিয়া। অথচ কত খবরই তো দিই টুইটারে, আমার পুরস্কার পাওয়ার খবর, অনারারি ডকটোরেট পাওয়ার খবর, আমার কীনোট স্পীচ দেওয়ার খবর, আমার স্ট্যাণ্ডিং ওভেশন পাওয়ার খবর। এসব খবরে মিডিয়ার উৎসাহ নেই মোটেও। আমার প্রেমিক এবং স্বামী নিয়ে মিডিয়ার উৎসাহ বরাবরই অবশ্য প্রবল। যাই হোক, যা বলছিলাম। আমার চেয়ে কুড়ি বছরের ছোট প্রেমিকের খবরখানা টুইটারে দিয়ে একধরণের পুলক বোধ করছিলাম। পুরুষের মতো কোনও আচরণ করা মেয়েদের মানায় না। তাই পুরুষের মতো আচরণ করে, বয়সে ছোট এক সঙ্গী নির্বাচন করে, দেখতে চাইছিলাম সমাজ কী বলে। যথারীতি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। আর এদিকে আমাকে টেক্কা দিয়ে ৬৭ বছর বয়সী রেলমন্ত্রী ধুমধাম করে বিয়ে করে বসলেন তাঁর চেয়ে প্রায় চল্লিশ বছরের ছোট এক মেয়েকে। কোথায় কুড়ি আর কোথায় চল্লিশ। আমি তো নেহাতই বয়ফ্রেন্ড অবধি। আর উনি রীতিমত বিয়ে করলেন, রীতিমত গায়ে হলুদ করে, প্রচুর গয়না গাটি আর লাল বেনারসি পরে সাজানো কনেকে, আর নিজে মাথায় পাগড়ি টাগড়ি চাপিয়ে। কোনও ৬৭ বছর বয়সী মহিলার কি সাধ্য আছে ২৯ বছর বয়সী কোনও ছেলেকে এভাবে ধুমধাম করে বিয়ে করার? মন্ত্রীর বিয়েতে যেভাবে সমাজের নারীপুরুষ উৎসব করলো, এমন জমকালো উৎসব কি করবে প্রায় সত্তর বছর বয়সী মহিলা আর কুড়ির কোঠায় বয়স এমন কোনও ছেলের বিয়েতে? অনেকে বলবে, পুরুষ ধনী এবং প্রভাবশালী হলে গোড়ালির বয়সী মেয়েদের বিয়ে করা সম্ভব। আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশের কোনও ধনী এবং প্রভাবশালী মহিলার পক্ষে কি সম্ভব গোড়ালির বয়সী ছেলেদের বিয়ে করা? সম্ভব তো নয়ই, বরং লোকে তাকে পুরুষখেকো ডাইনি বলে গালি দিয়ে সব্বনাশ করবে, একঘরে করবে, বলা যায় না জ্যান্ত জবাই হয়ে যেতে পারে সেই মহিলা। জানি অনেকে বলবে, বুড়ো পুরুষের শরীরে শুক্রাণু তৈরি হয়, সুতরাং তাদের পক্ষেও ঋতুময়ী মেয়েদের গর্ভবতী করা সম্ভব, আর ওদিকে রজঃশ্রাব বন্ধ হওয়া নারীর পক্ষে সম্ভব নয় গর্ভবতী হওয়া। কিন্তু কম লোকই জানে বুড়ো পুরুষের শরীরে শুক্রাণু তৈরি হয় বটে, তবে শুক্রাণুর সংখ্যাটা বেজায় কম, এবং শুক্রাণুর চেহারা-চরিত্র মোটেই সুবিধের নয়। যুবকের শুক্রাণু আর বৃদ্ধের শুক্রাণুতে বিস্তর তফাৎ। বৃদ্ধের শুক্রাণুতে গর্ভবতী হওয়া টগবগে যুবতীদের পক্ষেও খুব সহজ নয়, হয় বছরের পর বছর লেগে যায় গর্ভবতী হতে, অথবা কাউকে গর্ভবতী করার ক্ষমতাই রাখে না ওসব ভাঙা, নষ্ট, রুগ্ন, ক্ষুদ্র শুক্রাণুগুলো। শুধু তাই নয়, পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায় বুড়ো বয়সে, আর সে কারণেও বুড়োদের ঔরসে সন্তান জন্ম নিলে ক্রোমোজমের জটিল সমস্যা নিয়ে সে সন্তান জন্মানোর আশংকা থাকে। সুতরাং যারা বলে পুরুষ বুড়ো হলেও সন্তান বিশেষ করে সুস্থ সন্তান উৎপাদনে সম্ভব, তারা খুব নির্ভুল কথা কিন্তু বলে না।
প্রেম কোনও বয়স মানে না, প্রাপ্ত বয়স্ক যে কোনও বয়সের মানুষের মধ্যে প্রেম ঘটতে পারে, আমরা জানি। তাহলে পুরুষ আর নারীর মধ্যে শুধু পুরুষকেই বয়সে বড় হতে হবে কেন! আর ভালবাসা প্রধান হলে, সন্তান জন্মটা প্রধান নাও হতে পারে। অনেক নারী-পুরুষ সন্তান নেবে না, এই শর্তেই একত্রবাস করে অথবা বিয়ে করে। আজকাল এই শর্তটি দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ৬৭ বছর বয়সী মহিলা আর ২৯ বছর বয়সী যুবকের মধ্যে প্রেম বা প্রেমের কোনও বিয়ে নিয়ে কারও আপত্তি করা উচিত নয়, কিন্তু মানুষ আপত্তি করে। পুরুষের চেয়ে নারীর যৌনক্ষমতা বেশি, এ বিষয়ে আমার কোনও সংশয় নেই। অথচ যে কাণ্ড করে ৬৭ বছর বয়সী পুরুষ সমাজে আদৃত হয়, সেই একই কাণ্ড করে ৬৭ বছর বয়সী মহিলা সমাজে ঘৃণিত হয়। নারী-পুরুষের মধ্যে যে ভয়াবহ বৈষম্য সৃষ্টি করেছে আমাদের সমাজ, সেটির ছোট্ট একটি উদাহরণ এটি।
বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী সিলডেনাফিল সাইট্রেট অথবা ভায়াগ্রার ওপর নির্ভর করবেন যথেষ্ট, অনুমান করি। ভায়াগ্রা সেবনেরও একটা সীমা আছে। সব শরীরে ভায়াগ্রা সয় না। বিশেষ করে রক্তচাপ, হৃদপিণ্ড, কিডনি, লিভার ইত্যাদিতে কোনও সমস্যা থাকলে ভায়াগ্রা সেবন নিষিদ্ধ। রেলমন্ত্রী একটি জলজ্যান্ত যু্বতী শরীর নিয়ে খেলবেন। খেলায় পারদর্শী না হলেও খেলবেন। কারণ তিনি পুরুষ। তাঁর যাকে ইচ্ছে তাকে নিয়ে যেমন ইচ্ছে তেমন খেলা করার অধিকার আছে। গোটা পৃথিবীটাই পুরুষের খেলার মাঠ। মেয়েটি যৌনতৃষ্ণায় কাতরাবে। চরম হতাশায় নিমজ্জিত হবে। কিন্তু পুরুষের সংসার- খাঁচায় বন্দি হয়ে থাকতে সে বাধ্য হবে। কারণ সে একটা খেলনা। একটা যৌনখেলনা। একটা ডেকোরেশন পিস। সুখী না হয়েও সুখী সুখী ভাব করবে। সমাজের বেশির ভাগ মেয়েরা যা করে। সুখী নয়, অথচ সুখী বলে নিজেকে মনে করে। অথবা দুঃখকেই, না-পাওয়াকেই, পরাধীনতাকেই সুখ বলে, পাওয়া বলে, স্বাধীনতা বলে ভাবে। ভাবতে শিখেছে ছোটবেলা থেকেই। নতুন করে এর বিপরীত কিছু শেখা সম্ভবত অধিকাংশ মেয়ের পক্ষেই আর সম্ভব নয়। পুরুষেরা জন্ম থেকেই যা শিখেছে তা হল, তারা প্রভু, তারা সুপিরিওর, তারা জানে বেশি, বোঝে বেশি, তাদের জন্য সমাজ, তাদের জন্য জগত, তারা শাসন করবে, তারা ভোগ করবে। এটি না শিখতে এবং এর বিপরীত কিছু শিখতে অধিকাংশ পুরুষই রাজি নয়। মনে করতে চাই না কিন্তু বারবারই পুরুষেরা মনে করিয়ে দেয় ‘ইট’স এ ম্যান’স ম্যান’স ম্যান’স ওয়ার্ল্ড’।’
সূএ: ইন্টারনেট
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.