সরকারিকরণের দাবিতে চট্টগ্রামে রাস্তায় নেমে অবরোধ করেছে নগরীর এনায়েতবাজার মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করে গাড়ি চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। গতকাল সকাল ১১টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে কলেজের প্রায় শতাধিক ছাত্রী। এনায়েতবাজার মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আইরিন, তোহা, সাবরিনা নামের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রতি ৩ মাসে কমপক্ষে দশ হাজারেরও বেশি টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করছে। এত টাকা ব্যয় করার সামর্থ্য আমাদের অনেকের নেই। তাই সরকারিকরণের জন্য আমরা বেশ কিছুদিন ধরে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। একই দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। তবে কেবল এনায়েতবাজার মহিলা কলেজই নয়, শহরের আরো বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজে শিক্ষা শাখার বিসিএস ক্যাডারদের চলছে আন্দোলনের প্রস্তুতি। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের শিক্ষাঙ্গন। ইতিমধ্যে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিএস শিক্ষা শাখার এসব ক্যাডার। তাদের দাবি, দেশের ৩১৫টি বেসরকারি কলেজকে সরকারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব কলেজ সরকারিকরণের সঙ্গে-সঙ্গে সেখানকার প্রায় ২০ হাজার শিক্ষককেও বিসিএস ক্যাডারদের পদমর্যাদা দেয়া হবে। এতে ধাপে-ধাপে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ বিসিএস ক্যাডারদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেশির ভাগ কর্মকর্তা হারাবেন তাদের জ্যেষ্ঠতা। পরে যা শিক্ষাব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকের পরও কোনো ফল না হওয়ায় সারা দেশে তাই আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিসিএস শিক্ষা শাখার ক্যাডাররা। আন্দোলনের পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সম্প্রতি চট্টগ্রামে বৈঠক করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা। একইসঙ্গে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শিগগিরই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাকরির নীতিমালা তৈরির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সংগঠনের নেতারা জানান, সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে দেশের সকল সরকারি কলেজ ও শিক্ষা ক্যাডার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও বিধিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে না। তাই বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্ব রক্ষায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সবাই। বর্তমান সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। ৩২৫টি বেসরকারি স্কুল জাতীয়করণ করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অন্যদিকে ৩১৫টি বেসরকারি কলেজের জাতীয়করণও প্রায় চূড়ান্ত। জাতীয়করণের এই মহৎ উদ্যোগটি ভালো হলেও সেটিকে বিতর্কিত করার কোনো সুযোগ নেই। বেসরকারি কলেজের শিক্ষকগণকে ক্যাডারভুক্ত করার পাঁয়তারা চলছে। যা কোনোভাবেই হতে দেয়া যাবে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.