একজন কার্টলি অ্যামব্রোস যদি বাংলাদেশ থেকে বের করতে পারি তবেই আমি খুশি হবো। আমি মূলত কোচ নই, নিজেকে উদ্বুদ্ধকারী (মেন্টর) হিসেবে দেখে থাকি। শনিবার রাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। ক্যারিবীয় কিংবদন্তি এই পেসার গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। একেবারেই যে কোচিং অভিজ্ঞতা নেই তার। তাহলে কী করে দিক্ষা দেবেন মাশরাফিদের? চ্যালেঞ্জটা বেশ ভালোভাবেই জানেন ওয়ালশও। তাই তিনি বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। তবে চ্যালেঞ্জটা নেয়ার আগে তিনি টাইগারদের মধ্যে সম্ভাবনাটাও বেশ ভালোভাবে দেখেছেন। এই দেশের দায়িত্ব নেয়ার সম্পর্কে সংবাদকর্মীদের তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশে দারুণ কিছু করার সুযোগ আছে। এ কারণেই মূলত এখানে আসা। বাংলাদেশে অমিত সম্ভাবনাময় প্রতিভা আছে। তাদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। আমার মূল কাজ হবে বোলারদের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা নিয়ে আসা।’ সারা জীবন কাটিয়েছেন ক্যারিবীয় পরিবেশে। তবে খেলেছেন বিশ্বের সব জায়গাতেই। তাই বাংলাদেশেও নিজেকে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত কোর্টনি ওয়ালশ। কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা না থাকলেও মাশরাফি-মোস্তাফিজ-তাসকিনদের বোলিং কোচ হিসেবে তার কাঁধেই দায়িত্ব তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আর তাই তিনি বলেন, ‘আমি ১৭ বছর বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট খেলেছি। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজেই খেলিনি। সুতরাং এখানে থাকতে আমার সমস্যা হবে না। তবে যে চ্যালেঞ্জ আসবে, আমি তা নিতে চাই। বাংলাদেশে আমার পক্ষে যা কিছু সম্ভব আমি করবো।’ বাংলাদেশে আসার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক ছিলেন। তার কাছে আরও কিছু লোভনীয় প্রস্তাব ছিল; কিন্তু সবকিছু দূরে ঠেলে দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের। কেন বাংলাদেশকে বাছাই করে নিলেন ওয়ালশ? টেস্টে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ওয়ালশ বলেন, ‘বিসিবি প্রেসিডেন্ট (নাজমুল হাসান পাপন) আমাকে বলেছেন যে, পেস বোলিং কোচ হিসেবে আমাদের ভাবনায় আরও অনেকে আছে; কিন্তু তুমিই আমাদের প্রথম পছন্দ। বিসিবি প্রেসিডেন্টের এ কথাটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। এ কারণেই মূলত বাংলাদেশের কোচিং করানোর প্রস্তাবটা লুফে নিই।’ তবে শুধু যে বিসিবি সভাপতির কথাতেই রাজি হয়েছেন, তা নয়। তিনি বেশ ভালো করেই জানেন, এই দেশের মানুষ কতটা ক্রিকেট পাগল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তো প্রচুর ক্রিকেট পাগল মানুষ। এখানে ক্রিকেটের মজাটাই আলাদা।’ তার কথাতেই বোঝা যায় এখানে এসে চ্যালেঞ্জ নেয়ার আগে বেশ ভালোভাবেই এদেশ ও এদেশের ক্রিকেট নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। নিজেদের তথ্য-ভাণ্ডারে আগেই নানা বিষয় জমা করেছেন বাংলাদেশ নিয়ে। বিশেষ করে যাদের নিয়ে কাজ করবেন সেই পেসারদের সম্পর্কে ভালোই অবগত তিনি। তবে কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘আমি সবারই খেলা দেখেছি। বিশেষভাবে কারও নাম বলবো না। তবে এই দলটিতে বেশ কিছু সম্ভাবনাময় তরুণ পেস বোলার রয়েছে। তাদের নিয়ে সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে আমার বিশ্বাস, এরাই একদিন বিশ্বসেরা হয়ে উঠবে। আমিও নিজের সব অভিজ্ঞতা ঢেলে দেবো বাংলাদেশের তরুণ পেসারদের পেছনে। আশা করি, এরাই একদিন দুর্দান্ত পেস স্কোয়াড হিসেবে গড়ে উঠবে।’ তিন বছরের জন্য বিসিবি তার সঙ্গে চুক্তি করেছে। ওয়ালশের ইচ্ছা চুক্তি শেষ হতে যেন বাংলাদেশের পেস বোলিং বিশ্বে অন্যতম শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে তার শুরুর লক্ষ্য জানতে চাইলে বলেন, ‘এখনই লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজে নামতে পারবো না। প্রথমে সবাইকে এক এক করে দেখতে হবে। তার পরই লক্ষ্য নির্ধারণ করবো। তবে আমার মূল লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে যখন চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, তখন বাংলাদেশ দলকে বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসনির্ভর দল হিসেবেই দেখতে চাই আমি।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.