যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বাংলাদেশি বংশ্দ্ভুদ মিজ আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। তবে পরিণত বয়সে নয়, চার বছর বয়সে তার জীবনে এমন ঘটনা ঘটেছিল। প্রিয়তি তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
গতকাল প্রিয়তির পরিচিত ১২ বছরের এক মেয়ে তার মামার হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারপরই প্রিয়তি এই স্ট্যাটাস দেন। তার এ স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
চার বছর বয়সী একটা বাচ্চা যখন Sexually abused হয় , যখন সে বুঝেই না এবিউজিং কি , আর যখন বুঝে তখন থেকে সারা জীবন কি ধরনের Trauma এর মধ্যে থাকতে পারে তার ধারণা আমার আছে। কেননা সেই মেয়েটি আমি, আপনাদের মিজ আর্থ ইন্টারন্যাশনাল । হ্যাঁ, চার বছর বয়সে প্রথম বাসার কাজের মেয়ের কাছে Sexually abused হই । খেলতে দিবে না বলে মাকে কখনো বলিনি , আর তখন বুঝিনি । আমার বয়স চার থেকে খুব সম্ভত সাত বছরের মধ্যে Sexually abused হয়েছি ৫/৬ বার । কখনো পাশের বাসার খেলার সাথী ভাইয়ের কাছে , কোন দিন ভাইয়ের সামনে ডাক্তার সাহেব পর্দার আড়ালে, কোনদিন গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে এক সাথে সব বাচ্চাদের ঘুমাতে গিয়ে নিজের কাজিন এর কাছে ।
কথা হচ্ছে , কথাগুলো কখনো মা এর সাথে শেয়ার করিনি যদি আমাকে আর খেলতে না দেয় । যদি কোন দিন গ্রামের বাড়ি যেতে না যেতে দেয়? যদি উল্টা আমাকে বকা দেয় ? বোঝ হওয়ার পর থেকে ভাবতাম এত টুকুন বাচ্চা মেয়ে ছিলাম আর তার সাথে কত কিছুই না হয়ে গেল। আজ কেন বলছি?? গতকাল আমার এক পরিচিত ১২ বছরের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে তার নিজ মামা এর কাছে Sexually abused হয়ে। তার মাকে সে বলেছিল, মা বিশ্বাস করেনি আর বলেছে চুপ করে থাকতে । কিন্তু আমি আর চুপ করে থাকতে পারলাম না । বিশ বছর আগে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো অনেক পুরনো কিন্তু এই বিশ বছরে জাতি আরও সভ্য হওয়ার কথা কিন্তু দিন দিন ব্যাপার গুলো বাড়ছে আর হয়ে যাচ্ছে আরও অসভ্য এবং অসুস্থ । বাড়ছে প্রতিদিন ধর্ষণ । একটা কথা মাথায় আসতেই আজ গুগলে সার্চ দিলাম বাংলাদেশি সেক্স টয়েস লিখে। সাইটে গিয়ে দেখি বাচ্চাদের যৌনাঙ্গের সেক্স টয় অথবা রিপ্লিকা। আমি অবাকও হলাম, সাথে ভয়ও পেলাম । তার মানে , এই ধরনের মন মানসিকতার মানুষ আমাদের মধ্যেই ভদ্র মানুষ হিসাবে আছে আর তারা সেই মনবাসনা পোষণ করছেন আর তাই ওই বাচ্চাদের যৌনাঙ্গের সেক্স টয়গুলো বাজারে আছে। আর তারমানে এই গুলোর ডিমান্ড আছে ।
আমি বাচ্চাদের বাবা-মা অথবা গার্ডিয়ানদের বলব, কাউকে বিশ্বাস করবেন না। আপনার বাচ্চার সাথে বন্ধু সূলভ আচরণ করুন যাতে সে আপনার সাথে সব কিছু শেয়ার করে । আপনার বাচ্চাকে সর্বদা চোখে চোখে রাখুন, এমনকি কার সাথে খেলছে , কোথায় খেলছে । কারো বাসায় গিয়ে একা গিয়ে খেলতে দিবেন না । প্রয়োজনে আপনি যান আপনার সন্তানের সাথে। কারো কোলে বসতে দিবেন না । আপনারা নিজেদের ভিতর আপনাদের সচেতনতা তৈরি করুন, অন্যদের ও বলুন । আমি এই ব্যাপার টা জাস্ট ফেসবুক এ স্ট্যাটাস দেয়া পর্যন্ত শেষ করতে চাই না । আমি ব্যাপকভাবে সচেতনতা চাই, আর তার জন্য দরকার আপনাদের সহযোগিতা ।
আমার জানামতে, বাংলাদেশে Child Sexual Abuse এর কোন যথাযোগ্য কোন আইন নেই অথবা শাস্তির বিধান নাই, প্রধান মন্ত্রীর নিকট কিভাবে আবেদন করা যেতে পারে ( যদি থেকে থাকে তাহলে আমাকে জানাবেন প্লিজ)। But It’s a Criminal Offence in Europe and they have strict law for this issue । আমি জানি , দেশে এখন ধর্ষকদেরই ধরা বা শাস্তি হচ্ছে না কিন্তু Child Sexual Abuse যদি কোন আইন না থাকে তাহলে ব্যাপারটা আরও ভয়াবহ। আমি জানি আমার স্ট্যাটাসটি যারা পড়ছেন তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কোন না কোনভাবে Sexually Abused হয়েছেন কিন্তু লজ্জায় , সমাজের ভয়ে আমরা বলি না । না বলুন , কিন্তু অন্তত রুখে দাঁড়ান। Awareness create করুন, সবাইকে জানান । একটি শিশু কখনো ভুলে না তার ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা, আমি ভুলিনি । আর যেন না ঘটে তার চেষ্টা করি । কিভাবে রিকভার করা যায় সেই চেষ্টা করি। আমাদের শিশুদের নিরাপদে রাখি ।
ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য।
২০১৪ সালে ‘মিস আয়ারল্যান্ড’ এর মুকুট মাথায় উঠে প্রিয়তির। সেই সুবাদেই ‘মিস আর্থ’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হন তিনি। সুন্দরী এ কন্যার জন্ম রাজধানীর ফার্মগেটে। শিশুকাল ঢাকায় কাটলেও কৈশোরেই পড়াশোনার জন্য আয়ারল্যান্ডে পাড়ি জমান তিনি। মডেলিং করলেও পেশাগতভাবে বিমান চালনার সঙ্গে যুক্ত প্রিয়তি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.