ইন্টারনেটসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননাকারীর সাজা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমনা। আর এ অপরাধের বিচার হবে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে। অভিযোগ গঠনের পর থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে এ মামলা নিষ্পত্তির বাধ্য-বাধকতা থাকছে নতুন এ আইনে। বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকে অজামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবিত এই আইনে।
এমন বিধান যুক্ত করে সরকার ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৬’ নামের একটি নতুন আইনের খসড়া তৈরি করেছে। খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্যই ইতিমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পেশ করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
খসড়া আইনের ১৫ নম্বর ধারার ৫ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে যে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা আদালত কর্তৃক মীমাংসিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিষয়াবলি বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে যেকোনো প্রকার প্রপাগাণ্ডা, প্রচারণা বা তাহাতে মদদ প্রদান করে তাহা হাইলে উক্ত ব্যক্তি, সত্ত্বা বা বিদেশি নাগরিক ডিজিটাল সন্ত্রাসী কার্যসংঘটনের অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।’
মুক্তিযুদ্ধ বা বঙ্গবন্ধু অবমাননায় মদদ দেওয়ার বিবরণ দিয়ে খসড়া আইনের ২১ ধারায় বলা হয়েছে যে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, ইমেইল বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, রিসোর্স বা সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন, তাহা হইলে তাহার উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ। কোনো ব্যক্তি উক্ত অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করিবার ক্ষেত্রে মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রহিয়াছে তিনি সেই দণ্ডেই দণ্ডিত হইবেন।’
মুক্তিযুদ্ধ বা জাতির জনকের অবমাননাকারীর সাজা হবে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্যূন তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান থাকছে এ আইনে। এ বিষয়ে আইনের ১৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বিদেশি নাগরিক দ্বারা আইনের ১৫ নম্বর ধারার ২,৩,৪ ও ৫ নম্বর উপধারা এর অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটন করেন তাহা হইলে তিনি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্যূন তিন বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’
উক্ত অপরাধের বিচার হবে বিদ্যমান সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে। প্রস্তাবিত আইনে এ বিষয়ে ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ অনুযায়ী গঠিত সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল ও সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনালেরবিধান এ আইনেও প্রযোজ্য হইবে।’
মামলা বিচারের বিষয়ে বলা হয়েছে যে, ‘এই আইনের অধীনে মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ হইতে ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার কার্য সমাপ্ত করিবেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে তিনি উহার কারণ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করিয়া সময়সীমা অনধিক আরো ৯০ দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।’
এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অজামিনযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করে আইনের ৩৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, ‘আইনের ধারা ১৫ (ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা বঙ্গবন্ধুর অবমাননা) এর অপরাধ আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য হইবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.