মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ১৯৭১ সালের আল-বদর বাহিনীর কমাণ্ডার ও সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২ টা ১ মিনিটে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানা গেছে। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবিদের বেছে বেছে হত্যা করে আল-বদর বাহিনী। এসব হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন তৎকালীন ছাত্রসংঘের সভাপতি ও আল-বদর কমাণ্ডার মতিউর রহমান নিজামী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াত ইসলামীর আমীর ছিলেন। সব ধাপ পেরিয়ে বিচারের চুড়ান্ত রায় (৫ মে) হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় তা কার্যকর করলো সরকার।
যেভাবে গ্রেফতার:
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর (প্রধান নেতা) মতিউর রহমান নিজামীকে ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাতেও গ্রেফতার দেখানো হয়।
বিচার শুরু:
২০১২ সালের ২৮ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু করে।
ট্রাইবুনালের রায়:
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
আপিল বিভাগের রায়:
ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারিতে আপিলেও ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
রিভিউ আবেদনের রায়:
চলতি বছরের ২৯ মার্চ নিজামী আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেনার আবেদন করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং উচ্চ আদালতে দেওয়া ফাঁসির দণ্ড গত ৫ মে রিভিউয়েও বহাল থাকে।
রায় কার্যকর:
বিচার প্রক্রিয়ার সকল ধাপ শেষে একজন ফাঁসির আসামির সর্বশেষ সুযোগ থাকে রাষ্ট্রপতির কাছে জীবন ভিক্ষা চাওয়ার। কিন্তু, মতিউর রহমান নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান নি। এরপর রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.