সাতক্ষীরা জেলার কুশখালী সীমান্ত এলাকায় এক কেজি মাংসের জন্য শিশু ফাহিম আহমেদ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার ভোরে সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কুশখালী থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন কুশখালী গ্রামের মুজিবর রহমান, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন, ছেলে ইব্রাহিম হোসেন ও ইসরাফিল হোসেন। এছাড়া ইসরাফিল হোসেনের স্ত্রী তামান্না খাতুনকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে, তাদের আটকের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিশু ফাহিম হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
আটকদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, স্থানীয় বাজারে মুজিবর রহমানের সাইকেল মেরামতের একটি দোকান রয়েছে। গত ১৪ জুন সকালে এক কেজি গরুর মাংস ক্রয় করেন মুজিবর রহমান। এ সময় শিশু ফাহিমকে দিয়ে ওই মাংস বাড়ি পাঠান তিনি। ফাহিম মুজিবর রহমানের বাড়ি গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। এ সময় বাড়ির সামনে থাকা ভ্যানের ওপর মাংস রেখে চলে আসে শিশু ফাহিম। পরে মুজিবর রহমানের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি এসে দেখে মাংসের প্যাকেট কুকুরে টানাটানি করছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবর রহমান ফাহিমকে ডেকে পাঠায় এবং জিজ্ঞাসা করে সে মাংসের প্যাকেট কোথায় রেখেছিল। ফাহিম উত্তর দিলে মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বেদম মারপিট করে। এতে ফাহিমের শরীর থেকে রক্ত বের হতে থাকলে তা বন্ধ করতে ফেবিকল আটা দেয় মুজিবর ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তাতেও কাজ না হয়ে উল্টো ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওঠে। তখন কোনো উপায় না পেয়ে ফাহিমকে বাক্সবন্দী করে রাখে তারা। সেখানেই সে মারা যায়। মৃত্যুর পর রাতে কোন এক সময় ফাহিমকে পাশের পাটক্ষেতে ফেলে দেয় তারা। সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
প্রসঙ্গত, দুদিন নিখোঁজ থাকার পর গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় সদর উপজেলার কুশখালি সীমান্ত সংলগ্ন একটি পাট ক্ষেত থেকে শিশু ফাহিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মনিরুল ইসলামের ছেলে। মায়ের সাথে কুশখালি গ্রামে নানা হাজি মোহাম্মদ আলির বাড়িতে থাকত সে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.