হাঁ করে শ্বাস নেওয়াকে গ্রিক শব্দে অ্যাজমা বা হাঁপানি বলে। বাচ্চাদের বেশি হাঁপানি রোগ হওয়ার কারণ হলো তাদের শ্বাসনালির অতিসংবেদনশীলতা। অন্য শিশুরা দিব্যি ঠান্ডা লাগাচ্ছে, ধুলোবালির মধ্যে খেলছে বা যা ইচ্ছা খাচ্ছে; কিন্তু হাঁপানি আছে এমন শিশু তাদের অতিসংবেদনশীলতার কারণে এসব করলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। হাঁপানিতে ধুলাবালি কিংবা অ্যালার্জেনের কারণে শ্বাসনালিতে তিন ধরনের পরিবর্তন ঘটে: *শ্বাসনালির চারপাশের মাংস সংকুচিত হয় এবং শ্বাসনালি সরু করে ফেলে * মিউকাসজাতীয় আঠালো পানি নিঃসৃত হয়, যা শ্বাসনালির পথ বন্ধ করে দেয় *শ্বাসনালির মধ্যে প্রদাহ তৈরি হয়, ফলে শ্বাসতন্ত্রের আবরণী ফুলে ওঠে। শ্বাসনালির পথ আরও সংকুচিত হয়ে যায়। হাঁপানির লক্ষণ
*বুকের ভেতর বাঁশির মতো শাঁই শাঁই শব্দ হওয়া
* শ্বাস নিতে-ছাড়তে কষ্ট হওয়া
*ঘন ঘন কাশির জন্য স্বস্তিতে রাতে ঘুমাতে না পারা।
* বুকে আঁটসাঁট অথবা দম বন্ধ ভাব
চিকিৎসা
হাঁপানির চিকিৎসা হিসেবে ইনহেলার ও ওষুধ দেওয়া হয়। অবস্থা জটিল হলে নেবুলাইজ করতে হয়। সবচেয়ে ভালো হয় নেবুলাইজার মেশিন ঘরে কিনে রাখলে। ইনহেলার বা নেবুলাইজার ব্যবহারে কিন্তু শিশুর কোনো ক্ষতি হয় না। অনেকে মনে করেন, একবার ইনহেলার নিলে ওটার প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। তাই এটা ব্যবহার ভালো নয়, এ ধারণা সত্য নয়। ইনহেলার বরং মুখে খাওয়া ওষুধের চেয়ে নিরাপদ।
অ্যাজমা মানেই সারাক্ষণ ঘরে বসে থাকা নয়। তবে অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। শিশুর সামনে ধূমপান করা যাবে না। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাচ্চার বিছানায় লোমযুক্ত চাদর, কাঁথা, লেপ বা কম্বল ব্যবহার করবেন না। শিশুকে আঁশযুক্ত খেলনা, বল বা পুতুল দেওয়া যাবে না। বাচ্চার হাঁপানি হলে সব ধরনের খাবার বন্ধ না করে যে খাবারে অ্যালার্জি হয়, ঠিক সে খাবারটিই বন্ধ করা উচিত।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.