গতকাল রোববার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে দুর্বৃত্তরা যে তরুণীকে তুলে নিয়েছিল, তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় জানা না গেলেও রাত ১২টার দিকে তাঁর নাম-পরিচয় জানা গেছে।
অপহৃত ওই তরুণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৩৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলের (সম্প্রসারিত ভবন) একজন কর্মচারীর মেয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ইসলামনগরে পরিবারসহ থাকতেন সাবেকে ওই জাবি শিক্ষার্থী। সাভারের একটি বেসরকারি স্কুলে তিনি চাকরি করতেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, এ ঘটনায় আশুলিয়া থানা পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে এবং দেশের সব থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানান আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম রেজা। অপহৃতের স্বজনরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অপহৃত তরুণীর ভাই, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ (সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন) বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আশুলিয়া থানায় গিয়েছি। পুলিশ একটি জিডি করেছে। আগামীকাল (সোমবার) সকাল ১০টায় আমরা মামলা করব।’ তবে সন্দেহভাজন হিসেবে কাউকেই চিহ্নিত করতে পারছেন না অপহৃতের স্বজনরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল গেট থেকে একজন তরুণী এক যুবকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ক্লাবের দিকে আসছিলেন। তাঁরা ক্লাবের সামনে এলে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পান্দুয়া এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ-১৩৯১০৩) কর্মচারী ক্লাবের দিকে আসে। গাড়িটি তাঁদের পাশে এসে থামলে সঙ্গে থাকা যুবক ও গাড়িতে থাকা কতিপয় ব্যক্তি তরুণীকে জোর করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। এ সময় ওই তরুণী চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু লোকজন গাড়ির কাছে পৌঁছানোর আগেই মেয়েটিকে তুলে গাড়িটি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল গেট দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। পরে লোকজন সেখানে গিয়ে ডান পায়ের একটি মেয়েদের জুতা, একটি কানের দুল ও একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পাসপোর্ট সাইজের ছবিটি ওই তরুণীর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গাড়িতে তুলে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে এগুলো পড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গা থেকে কীভাবে ঘটনাটি ঘটল, এ নিয়ে ক্যাম্পাসে চলছে আলোচনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটগুলোতে গাড়ি প্রবেশের সময় রেজিস্ট্রি খাতায় নিবন্ধন করে প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকলেও বেশ কয়েকটি পকেট গেট রয়েছে, যেগুলোতে কোনো নিরাপত্তা প্রহরা ও গাড়ি প্রবেশে নিবন্ধনের ব্যবস্থা নেই। পান্দুয়া এলাকাসংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পকেট গেট দিয়ে অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটি ঢুকেছে, সেখানে নিবন্ধনের কোনো ব্যবস্থা নেই। নির্বিঘ্নে অপহরণের স্বার্থে দুর্বৃত্তরা তাই এই গেটটিকেই ব্যবহার করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.