ভোলা শহরে স্বামীর সহযোগিতায় এক নারী (১৯) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলার গরুর হাটখোলা নামক স্থান থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গণধর্ষণের অভিযোগে ওই নারী তাঁর স্বামীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আজ বুধবার ভোলা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদী উপজেলায়। তিনি ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। ওই এলাকায় অ্যামব্রয়ডারির কারখানায় কাজ করত আসামি টিটু। সেই সুবাদে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে বিয়ে হয়। তারা পরিবারের সদস্যদের কাছে গোপন রেখে স্বামী-স্ত্রীর মতো মেলামেশা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ঢাকা থেকে লঞ্চে করে গত ২০ জুন টিটু তাঁকে ভোলায় নিয়ে আসেন। টিটুর বাড়ি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গরুর হাটখোলা এলাকায়। টিটু ওই দিন রিকশায় করে ভোলা শহরের বিভিন্ন স্থানে তাঁকে ঘুরায়। সেদিন দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে টিটু মুঠোফোনে কল দিয়ে মো. লিটন, রুবেল, সোহাগ, সোহেল, হাছিবুল ও সুজনকে ডেকে আনে। তারা রাত ৩টা পর্যন্ত মামলার বাদীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে বাদী অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর উল্লেখিত আসামিরা তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেন।
এদিকে গতকাল সকাল থেকে গরুর হাটখোলা নামক এলাকায় রাস্তার পাশে অপরিচিত এক নারীকে ‘শুয়ে’ থাকতে দেখে লোকজনের ভিড় বাড়ে। একপর্যায়ে লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের চিকিৎসায় ওই নারীর চেতনা ফিরে এলে পুলিশ গণধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারে। বর্তমানে ওই নারী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, টিটুসহ মামলার আসামিরা সংঘবদ্ধ চক্র। তারা প্রায় এ ধরনের কাজ করে থাকে। তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এভাবে মেয়েদের প্রেম বা বিয়ের ফাঁদে ফেলে নিয়ে আসে। এরপর ধর্ষণের পর যৌনব্যবসা করতে বাধ্য করায়। স্থানীয় লোকজন এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, ‘এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখেছি আসামিরা খুবই খারাপ। গণধর্ষণের শিকার হওয়ায় বাদীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁর ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.