বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা বাদ দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে আজ শনিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা সদরের প্রায় সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী।
রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ও একটি মহিলা কলেজ উদ্বোধন করতে দিরাই উপজেলা সদরে শনিবার সকালে আসার কথা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের। তাই রাস্তার দুই পাশে দিরাই ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে উদ্বোধনস্থলের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা উপজেলা সদরের প্রায় সব মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা পরিপাটি পোশাকে দাঁড়িয়ে অবস্থান নেয়। অথচ দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের আজ সকাল ১০টা ও দুপুর ২টায় প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মন্ত্রী আসবেন বলে সেই পরীক্ষা বাদ দিয়ে শিক্ষকরা তাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী নিলয়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শনিবারে পরীক্ষা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অনুরোধে আমরা আজকের পরীক্ষা নিয়মিত পরীক্ষার শেষের দিকে নেব।’
প্রধান শিক্ষক দাবি করেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী আসবেন বলে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই উনাকে দেখার জন্য আমাদের বলে। পরে আমরা তাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়াই।’
দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, শিক্ষামন্ত্রী আসবেন বলে তারা দেড় ঘণ্টা ধরে স্কুলের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিল।
দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘স্যারেরা বলেছেন তাই প্রায় সাড়ে ১১টা থেকে লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি।’
রজনীগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে রাস্তার দুই পাশে তারা বৃষ্টিতে ভিজে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।
ছাত্রদের নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এক শিক্ষক অনেকটা বিরক্ত হয়েই জানান, সাড়ে ১১টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। আরো কত সময় দাঁড়াতে হবে কে জানে? তিনি জানান, ১০টায় পরীক্ষা ছিল কিন্তু হয়নি। আর ২টার পরীক্ষাও হবে কি না তাও তিনি বলতে পারেন না।
শিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন ফুল হাতে মহিলা কলেজের ছাত্রীরা কী করবে বলে নবপ্রতিষ্ঠিত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত মহিলা কলেজের এক প্রভাষকের কাছে জানতে চায়। শিক্ষক তাদের বলেন, বৃষ্টি এলেই দাঁড়ানোর সার্থকতা। পরে ওই শিক্ষকের কাছে আবারও জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক ক্ষণ ধরে দাঁড়িয়েছি। এখন চলে গেলে তো সব সার্থকতা শেষ। তাই তারা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ফুল হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.