মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এ অভিযানে বহু বাংলাদেশীসহ সহস্রাধিক আটক হওয়ার খবর রয়েছে। স্বভাবতই সেদেশে কর্মরত ‘অবৈধ’ বাংলাদেশীরা আতংকে দিনাতিপাত করছেন। তারা তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের দিকে। তাদের অভিযোগ, অন্য দেশের দূতাবাসগুলো তাদের নাগরিকদের রক্ষায় তৎপর হলেও কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। অনেকটা একই অবস্থা বিরাজ করছে সৌদি আরবেও। সেদেশে বহু কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং আকামা (ওয়ার্ক পারমিট) নিয়ে জটিলতায় হঠাৎ চাকরি হারিয়েছেন বহু শ্রমিক, যাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশীও রয়েছেন। তারা কোনোমতে একবেলা খেয়ে বেঁচে আছেন। তাদেরও অভিযোগ, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের কেউ শ্রমিকদের এ অবস্থায় খোঁজ নিতে আসেননি। বিষয়টি অত্যন্ত পরিতাপের। প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। বিদেশে কোনো প্রবাসী শ্রমিক বিপাকে পড়লে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো দূতাবাসের কর্তব্য। এটা ঠিক, কারও ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা সময়মতো নবায়নের দায়িত্ব প্রথমত ওই ব্যক্তির নিজের। কেউ বিদেশে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থান করলে সেদেশে তিনি অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত হবেন, এটি সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিদেশে অবস্থানকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকেই এটি অনুধাবন করতে হবে। প্রত্যেকেরই উচিত তাদের ‘অবৈধতা’ নিরসনের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। যারা এতে ব্যর্থ হবেন, তাদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দূতাবাসকে তৎপর হতে হবে। অভিযোগ আছে, অন্যান্য দেশের দূতাবাস এ ব্যাপারে তৎপর হলেও বাংলাদেশ দূতাবাস অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। এটি কাম্য নয়। এর ফলে বিদেশে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে দেশ থেকে মানব পাচার রোধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি অবৈধভাবে শ্রমিক প্রেরণে নিয়োজিত, তাদের চিহ্নিত করে নিতে হবে ব্যবস্থা। সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী কর্মরত। বর্তমানে এ দুটি দেশসহ অন্যত্র যেসব বাংলাদেশী শ্রমিক ‘অবৈধতার’ জটিলতায় পড়ে বিপদ ও আতংকগ্রস্ত, আমাদের দূতাবাসগুলো অবিলম্বে তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে, এটাই কাম্য।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.