তীব্র শক্তিশালী ভূমিকম্পে ইতালিতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২১ জন। ধসে পড়েছে অনেক ভবন। এর নিচে এখনও আটকা পড়ে আছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। স্থানীয় সময় রাত ৩টা ৩৬ মিনিটে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ইতালির মধ্যাঞ্চলীয় শহর পেরুজিয়ায়। এতে ওই শহরের অর্ধেকটা ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন একজন মেয়র। মাটির সঙ্গে মিশে গেছে আমাট্রিস শহর। পার্শ্ববর্তী আকুমোলির রাস্তায় রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ। আকুমোলির মেয়র স্টেফানো পেট্রুসি পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাতে ভূমিকম্প হয়েছে। দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে সব পরিস্কার হয়ে গেছে। চারদিকে শুধু ধ্বংসাবশেষ। আমরা যেমনটা আশঙ্কা করেছিলাম তার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্তিতি। এখানে ওখানে ধসে পড়ে আছে ভবন। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকরা পড়ে আছে মানুষ। কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব নেই। যা কিছু ভবন দাঁড়িয়ে আছে তাতে বিশাল বড় ফাটল। এর মাঝেই বার বার উচ্চ মাত্রায় কম্পন অনুভূত হচ্ছে। কয়েকদিন, এমন কি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত এমনটা চলতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, অনলাইন বিবিসি ও সিএনএন। এতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আরএআই’কে কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২১ জন। আকুমোলি শহরের মেয়র স্টেফানো পেট্রুসি বলেছেন, ওই শহরের অনেক ভবন ধসে পড়েছে অথবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, চারজন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছেন। তবে তারা যে বেঁচে আছেন এমন কোন লক্ষণ মিলছে না। এর মধ্যে রয়েছেন পিতামাতা ও তাদের দু’সন্তান। আরএআই স্থানীয় পুলিশকে উদ্ধৃত করে বলেছে, পাশের গ্রাম পেসকারা ডেল ট্রোনটোতে নিহত হয়েছেন দু’জন। বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে পাহাড়ি আমাট্রিস শহরে। গত রাতে যখন মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঠিক তখনই এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে চারদিক দুলতে থাকে। ধসে পড়ে অনেক ভবন। রোমে তা অনুভূত হয় ২০ সেকেন্ড। আমাট্রিস শহরের মেয়র সার্জিও পেরোজ্জি বলেছেন, তার শহর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহরের ভিতরে ও বাইরের সড়কগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অর্ধেক শহর শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এতে সেতুগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতালির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এ ভূমিকম্পকে ভয়াবহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। প্রথমে বলা হয়েছিল এ ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৪। আমব্রিয়ার সেসেলির অধিবাসী লিনা মারকানটিনি বলেছেন, এ ভূমিকম্প ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি তখন বিছানায় ঘুমে। অকস্মাৎ মনে হলো আমার বিছানা ঘরজুড়ে নড়াচড়া করছে। সঙ্গে সঙ্গে রাতের অন্ধকারে মানুষজন বেরিয়ে আসে রাস্তায়। যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিকম্প পূর্বাভাষ বিষয়ক সংস্থা ইউএসজিএস বলেছে, তাদের ধারণা এ ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হবে। এর আগে ২০০৯ সালে আকুইলা অঞ্চলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। তাতে কমপক্ষে ৩০০ মানুষ নিহত হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.