গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজপাড়া এলাকায় গত শুক্রবার অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ হাসপাতালে মারা গেছেন। তাঁকে হত্যার অভিযোগে হাসপাতাল থেকে স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূ ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজপাড়া এলাকার রুবেল মিয়ার স্ত্রী সুমা আক্তার (৩০)। নিহত সুমার পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানার সুমা আক্তারের সঙ্গে আট-নয় বছর আগে ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজপাড়া এলাকার সামসুল হকের ছেলে রুবেলের (৩৫) বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে সাত বছরের একটি মেয়ে ও চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কিছুদিন ধরে অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রুবেল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের শুরু। শুক্রবার সকালেও এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রুবেল দুই শিশুকে ঘর থেকে বের করে দেন এবং দরজার বাইরের ছিটকিনি লাগিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে সুমার মেয়ে চিৎকার শুরু করে। এ সময় বাড়ির লোকজন দরজা খুলে সুমার শরীরে আগুন জ্বলতে দেখেন। পরে আগুন নিভিয়ে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর স্বামী ও শ্বশুর। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। সুমার চাচা আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর ভাতিজিকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে সুমার ভাশুর ঝুমুর মিয়া বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সুমা। একপর্যায়ে দরজা খুলে তিনি ঘরের বাইরে চলে আসেন। এ সময় তিনি (ঝুমুর মিয়া) ও তাঁর স্ত্রী এসে সুমার শরীরে ভেজা কাপড় জড়িয়ে ধরেন ও পানি ঢালেন। খবর পেয়ে স্বামী রুবেল হোসেন ও শ্বশুর সামসুল হক তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বলেন, সুমা আক্তারের শরীরের ৯২ শতাংশ পুড়ে যায়। সুমার অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল থেকেই শুক্রবার সন্ধ্যায় সুমার স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়। তবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.