চাঁদপুরে সাথী আক্তার (১৪) নামের এক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মধ্য বাগাদী গ্রামে গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, পরীক্ষার ফি পরিশোধ না করায় আগের দিন বিদ্যালয়ে সাথীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে অপমানিত হয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। বাগাদী গ্রামের দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন শেখের তিন মেয়ের মধ্যে সাথী মেজো। সে বাগাদী গণি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সাথীর মা শায়লা বেগম অভিযোগ করেন, পরীক্ষার ফি পরিশোধ না করায় গত রোববার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন তাঁর মেয়েসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রোদের মধ্যে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন। গতকাল সকালে সাথী পরীক্ষার ফির বকেয়া ৮০ টাকা চাইলে তিনি তা জোগাড় করতে বাড়ির অন্য মানুষের কাছে যান। এ সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সাথী। সাথীর বাবা দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের মাসিক বেতন ও পরীক্ষার ফিসহ ছিল ৪০০ টাকা। এর মধ্যে ৩২০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। বকেয়া ৮০ টাকার জন্য সাথীকে সাজা দিয়েছিলেন মো. আলাউদ্দিন। বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সাথীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার ফি বকেয়া থাকার কারণে সাথীকে সাজা দেওয়া হয় এবং এ ঘটনার জেরে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি।’ এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ করেছেন বলেও জানান তিনি। ঘটনার ব্যাপারে জানতে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম হজের উদ্দেশে রওনা দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ কারণে বিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরেছি। হজের কারণে ঢাকায় আছি। তাই এ নিয়ে এখন কথা বলতে পারছি না।’ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনায় কোনো শিক্ষক দায়ী থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়ালিউল্লাহ গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে সাথীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.