শাহ্জালালের নতুন মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) কেনা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর বদলে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। গত ১লা জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। উচ্চপর্যায়ের এ কমিটিই রাডার কেনার বিষয়ে পিপিপি’র বদলে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেবে। আগামীকাল অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বিষয়টি আলোচনার জন্য উঠছে। বিমান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পিপিপি’র ভিত্তিতে প্রকল্পটির আর্থিক প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য গত অক্টোবরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। মূল্যায়ন শেষে দর প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো সার সংক্ষেপেও এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে পিপিপি’র ভিত্তিতে রাডার ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের জন্য ২০১২ সালের ১৭ই এপ্রিল একটি আনসলিসিটেড প্রস্তাব পায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করিম অ্যাসোসিয়েটস ওই সময় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেয়। ২০১৩ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) প্রকল্পটি ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পিপিপি’র মাধ্যমে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ব্যয় পরে বেড়ে হয় ৫৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের জন্য পিপিপি’র অংশীদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করলে করিম অ্যাসোসিয়েটস প্রায় ৭০০ কোটি টাকা দর প্রস্তাব দেয়। তবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নের পর একই প্রকল্পের ব্যয় আরো এক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দেখিয়ে অনুমোদনের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে দফায় দফায় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি এবং এ ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ এটি বাতিল করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পিপিপি’র অংশীদার চেয়ে ২০১৫ সালের ৮ই নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। দরপত্র আহ্বানের ২১ দিনের মধ্যে দর প্রস্তাব জমা দেয়ার কথা থাকলেও প্রায় সাতবার পেছানো হয় এর তারিখ। সর্বশেষ গত বছর ২২ জুন দরপত্র জমা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এতে দেশি- বিদেশি মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব জমা দেয়। এর মধ্যে মেসার্স অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল ফ্রান্সের থ্যালেস, মেসার্স করিম অ্যাসোসিয়েটস কানাডার রেডিয়ন, উইংস এভিয়েশন- শান্তা হোল্ডিংস কনসোর্টিয়াম ও মেসার্স গেকি তোশিবার রাডার স্থাপনের প্রস্তাব জমা দেয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে দু’টি প্রস্তাব নন-রেসপন্সিভ হয়। বাকি দু’টি প্রতিষ্ঠান কারিগরি মূল্যায়নের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়। দু’টি প্রস্তাবের মধ্যে করিম অ্যাসোসিয়েটসকে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে বেবিচকের কোয়ালিফিকেশন অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন কমিটি। তবে তাদের প্রস্তাবকে অযোগ্য বিবেচনা করেছে মন্ত্রণালয়। এ কারণে প্রকল্পটি পিপিপি’র বদলে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.