একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বেপরোয়া হয়ে উঠছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগ। বিনা কারণে ছাত্রদল কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর এবং নানা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। গত এক মাসে পার্শবর্তী এলাকা গেরুয়া বাজারে ভাঙচুর, মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠানে হাতাহাতিসহ নানারকম অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েছে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, গত এক মাস ধরে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধারাবাহিকভাবে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ক্যাম্পাসের রাতে মীর মোশাররফ হোসেন হলে তিন নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগ দিয়েছে ওই হলের ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীরা। এসময় এক শিক্ষার্থীকে জানালায় ঝুলে থাকতে বাধ্য করা হয়।
তার আগের দিন ১৩ এপ্রিল শহীদ সালাম বরকত হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ওয়েলকাম পরিবহনের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সময় গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, অনেক সময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিনা কারণে ওই সকল পরিবহনের গাড়ি ক্যাম্পাসের সামনে থামিয়ে ভাঙচুর করা হচ্ছে। গত ১১ এপ্রিল ছাত্রদলের সহ-সভাপতি বিপ্লবকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেয় জাবি শাখা মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এছাড়া গত ২৬ মার্চ শহীদ রফিক-জব্বার হলের এক ছাত্রলীগের নেতার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় গেরুয়া বাজারের ৫টি দোকানে হমলা ও ভাঙচুর চালায় ওই হলের নেতাকর্মীরা। একই দিন ছাত্রলীগের শোডাউনে না যাওয়ায় ২০ সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করে আল-বেরুনী সম্প্রসারিত হলের নেতাকর্মীরা।
১২ মার্চ সাভার থেকে ক্যাম্পাসে আসার সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের গায়ে ভিলেজ লাইন পরিবহনের ধাক্কা লাগার কারণে চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে রাসেলের অনুসারীরা। এর আগে ৩ মার্চ পরিসংখ্যান বিভাগের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুক্তমঞ্চে শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয় আল-বেরুনী সম্প্রসারিত হলের এক শিক্ষার্থী।
এসকল বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেল বলেন, ‘বৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসেবে জুনিয়র কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে যারা প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ছাত্রলীগ।’
এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগের জন্য কলঙ্কজনক। ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের মধ্যে কিছু অপশক্তি প্রবেশ করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। শিগগিরই জাবি শাখা ছাত্রলীগ এসব ঘটনা প্রতিহতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.