বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়া বক্তব্যের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর আনু মুহাম্মদ। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন ‘বিএনপির কিছু লোক ফেসবুকে এই মাত্রায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন কেন? অসহিষ্ণুতা, কুৎসা, কদর্য মিথ্যাচার দেখছি আওয়ামী লীগের কিছু লোকের একক সম্পত্তি নয়। জাতীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলন নিয়ে কোনো কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ওপরই তাদের এই বিষোদগার। তারা বলছেন, আমি কেন আগ বাড়িয়ে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করার সুযোগ নেই বলেছি? বিএনপি তো আমাদের কোনো ঐক্যের প্রস্তাব দেয়নি। না, বিএনপি ঐক্যের কোনো প্রস্তাব দেয়নি, আমিও আগ বাড়িয়ে কিছু বলিনি। আমাদের সংবাদ সম্মেলন ছিল প্রধানত প্রধানমন্ত্রীর ভুল তথ্য ও জাতীয় কমিটি নিয়ে তার বিষোদগারের জবাব। প্রশ্নোত্তরে, খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের কারণে, সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন খুবই সঙ্গত ছিল যে, ‘আপনারা কি বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাবেন?’ আমাকেও তখন আমাদের নীতিগত অবস্থান পরিষ্কার করতে হয়েছে। আমাদের নীতিমালাতেই আছে, যেসব দল ক্ষমতায় থাকাকালে জাতীয় স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন নীতি ও চুক্তি করেছে তাদের সঙ্গে আমাদের ঐক্যবদ্ধ কাজ করা সম্ভব নয়। যেকারণে ২০০৬ সালে আমাদের আন্দোলনে সমর্থন দেয়া সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কোনো ঐক্যবদ্ধ কাজ সম্ভব হয়নি, সেকারণেই বিএনপির সঙ্গেও তা সম্ভব হবে না। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে, বিএনপি যদি রামপাল প্রকল্প বিরোধী আন্দোলন করে তাতে আমরা বেজার হবো। তখনও বলেছি, এখনও বলি, আমরা সারা দেশের সকল পর্যায়ের মানুষকে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান নিয়েই গত কয়েক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সবসময়ই বলেছি, শুধু জাতীয় কমিটির ব্যানারে নয়, এর বাইরেও বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংগঠন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় হোন। এখানে যতো দল, সংগঠন ও মানুষ শামিল হয় ততো ভালো। কাজেই আমরা তো বিএনপির রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী এই অবস্থানকে স্বাগতই জানাচ্ছি। বিএনপি নেতৃবৃন্দ আমাদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন সেজন্যও তাদের ধন্যবাদ। প্রকৃতপক্ষে হাতেগোনা কিছু লোক ছাড়া দেশের সকল পর্যায়ের মানুষই সুন্দরবনধ্বংসী এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে, সরকারি জোটের অধিকাংশ দল বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ মানুষ এর বিরুদ্ধে। সুন্দরবনধ্বংসী প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমতকে সক্রিয় তৎপরতায় নিয়ে যাওয়াই জরুরি। নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই সর্বব্যাপী প্রতিরোধ যতো জোরদার হবে ততো দ্রুত এই প্রকল্প বাতিল হবে। যতো দেরি হবে ততো সুন্দরবনের ক্ষতি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থান ও উপায়ের বিকল্প আছে, সুন্দরবনের বিকল্প নাই, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ারও কোনো বিকল্প নাই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.