পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে গতকাল শুক্রবার আদালত ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের আবাসে দুই সন্ত্রাসী হামলায় হামলাকারীসহ মোট ২০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। জামাতুল আহরার নামের একটি জঙ্গি সংগঠন দুটি হামলারই দায় স্বীকার করেছে। গত মাসে কোয়েটার হাসপাতালে যে হামলায় ৭৩ জন নিহত হন, তারও দায় স্বীকার করেছিল সংগঠনটি। গতকাল দুপুরে পেশোয়ারের কাছের মারদান শহরে আদালত ভবনে আত্মঘাতী হামলায় হামলাকারীসহ কমপক্ষে ১৪ জন নিহত ও ৪১ জন আহত হন। আহত লোকজনের মধ্যে চারজন আইনজীবী ও পুলিশের তিনজন সদস্য রয়েছেন। এর আগে ভোরে প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের খ্রিষ্টান কলোনিতে চার বন্দুকধারী হামলা চালায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের গুলিবিনিময়ের সময় বন্দুকধারী চারজনই নিহত হয়। দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে মারা যান আরও দুই বেসামরিক লোক। জামাতুল আহরারের হামলায় কোয়েটার হাসপাতালে নিহত ৭৩ জনের বেশির ভাগই ছিলেন আইনজীবী। গত মাসের ওই হামলার পর আইনজীবী ও বিচারকেরা জামাতুল আহরারের নিশানায় রয়েছেন বলে জনমনে যে ধারণা তৈরি হয়, গতকাল আদালত ফটকে হামলার পর সেই ধারণা আরও জোরালো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মারদান জেলার পুলিশপ্রধান ফয়সাল শেহজাদ বলেন, দুপুরের দিকে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী জেলা আদালতের ফটকের সামনে এসে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। আতঙ্কে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করলে সে ফটক দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের একজন সদস্য তাকে বাধা দেন ও গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ হয়েও হামলাকারী আদালত ভবনের বাইরের দিকের এক কক্ষে তার শরীরে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ফয়সাল শেহজাদ বলেন, হামলাকারীর শরীরে আট কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল। তিনি বলেন, পুলিশের ওই সদস্য হামলাকারীকে না ঠেকালে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়ত। এর আগে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পেশোয়ারের খ্রিষ্টান কলোনিতে চার বন্দুকধারী ঢুকে পড়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। তবে পুলিশ তাদের শেষ পর্যন্ত হত্যা করতে সক্ষম হয়। ‘পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে এবং জঙ্গিরা চাপের মুখে রয়েছে’ বলে বৃহস্পতিবার দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক আসিম বাজওয়া বিবৃতি দেন। এর পরদিনই এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, জঙ্গিরা এখন পিছু হটছে। নিরস্ত্র মানুষের ওপর এই হামলা তাদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.