সত্য হলে ক্ষমা চাইতে রাজি পরিচালক
অনুমতি ছাড়াই নন্দিত লেখক-নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘দেবী’ নিয়ে কলকাতায় চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়ে ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশান পিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইম্পা) কাছে হুমায়ূনপত্নী-নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি ইম্পাকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি ইম্পার প্রডিউসার বিভাগের চেয়ারম্যান পিয়া সেনগুপ্তের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিতভাবে নকলের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। পিয়া সেনগুপ্ত এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, অভিযোগ তারা পেয়েছেন। এবার কমিটি বসে তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। কলকাতার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখর দাস ‘ইএসপি-একটি রহস্য গল্প’ নামে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন। ভারতীয় বাংলা চ্যানেল জি-বাংলায় ছবিটির প্রিমিয়ার হওয়ার পরই জানা যায়, হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস থেকে গল্প, ভাবনা, দর্শন, বিষয়, এমনকি চরিত্রগুলো হুবহু নিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ছবিটির ক্রেডিট লাইনে হুমায়ূন আহমেদের নাম নেই; বরং গল্পকার হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে জনৈক ‘শিবাশিস রায়’-এর। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা, সাহেব চ্যাটার্জি, রাইমা সেন। এ নিয়ে হুমায়ূনপত্নী এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও ভেবেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। ক্ষুব্ধ শাওন আরো বলেছেন, ছবিটি দেখার পর প্রথমত হুমায়ূন আহমেদের একজন ভক্ত হিসেবে আমি খুবই বিরক্ত হয়েছি। দ্বিতীয়ত, মনে হয়েছে যে কেউ চাইলে অন্যের গল্প নিয়ে ছবি বানাতেই পারেন। এপার-ওপার বাংলায় তেমন হচ্ছেও তো। তবে এর জন্য আগাম অনুমতি নিয়ে তারপর হয়। সেটা যদি নাও নেয়া হয়, পর্দায় নামটা অন্তত উল্লেখ করা হয়। অথচ এখানে এর কিছুই করেননি পরিচালক। তবে পরিচালক শেখর দাস ঘটনার কথা জানতে পেরে মর্মাহত বলে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনা যদি সত্য হয় তবে তিনি ক্ষমা চাইতে রাজি। এমনকি ছবিতে হুমায়ূন আহমেদের নাম উল্লেখ করতেও তিনি রাজি। তিনি আরো বলেছেন, গল্পটি হুমায়ূন আহমেদের জানলে তিনি খুশি মনে তা কিনে নিতে আরো অর্থ খরচ করতেন। আর হুমায়ূনের মতো ব্যক্তির নাম থাকলে যে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সুবিধাই হয় সেকথাও তিনি জানিয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, শিবাশিস রায় নামে কলকাতার ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা একজনের কাছ থেকেই তিনি গল্পটি কিনেছেন। রয়্যালটিও দিয়েছেন। সেটি আইন মেনে নথিভুক্তও করেছেন। তবে অভিযোগ যা উঠেছে তা যাচাই করে দেখতে পরিচালক ‘দেবী’ উপন্যাসটি পড়বেন বলে জানিয়েছেন। গল্পকার বলে যার নাম দেয়া হয়েছে সেই শিবাশিস রায় কলকাতার একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, তিনি এফটিটিআই-তে পড়ার সময় (২০০৯-২০১০) গল্পটি লিখেছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে প্যারা সাইকোলজি নিয়ে আলোচনা থেকেই ভাবনাটি উঠে এসেছিল। বন্ধুদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশেরও ছিলেন। তাদের কাছ থেকেই ভাবনাটি এসেছিল কিনা তা তিনি এতদিন পরে নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.