খুলনার পূর্ব রূপসা ঘাটে চারটি মাছের ডিপোতে অভিযান চালিয়ে ৯০ মণ চিংড়ি জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়ায় ৫৫ মণ চিংড়ি রূপসা সেতুর ওপর থেকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৫ মণ চিংড়ি নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত শনিবার রাতে খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন, র্যাব-৬-এর এএসপি মো. নুরুজ্জামান, রূপসা থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় শহিদুল ইসলাম ও নাছির শেখ নামের দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড এবং ইব্রাহিম নামের এক ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ফজল আলী ও ইকরামুল হক নামের আরও দুজনকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সময় গ্যাসের পাঁচটি বড় সিলিন্ডার, চুলা, ক্ষতিকর পদার্থ প্রয়োগ করার সরঞ্জামও জব্দ করা হয়।
নির্বাহী হাকিম আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানকালে দেখা যায়, অপ্সরী জ্যোতি ফিশ, চৌধুরী ফিশ, কালু ফিশের ডিপোর পেছনে মাটির নিচে গোপন আস্তানায় গ্যাসের সিলিন্ডার ও চুলা ব্যবহার করে ক্ষতিকর পাউডার ও আঠা দিয়ে জেলি তৈরি করা হচ্ছে। এসব জেলি সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়ির ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। ডিপোর পেছনের ঘরে তালা লাগিয়ে শ্রমিকেরা এই ক্ষতিকর গরম জেলি প্রয়োগের কাজ করেন। ক্ষতিকর গরম জেলি তরল অবস্থায় সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়ির ভেতরে ঢোকানোর পর বরফের পানিতে ভিজিয়ে শক্ত করা হয়। শক্ত হওয়ার পর এগুলো প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়।
নির্বাহী হাকিম বলেন, এই তিনটি ডিপো থেকে ৭৮ মণ চিংড়ি জব্দ করা হয়। এর মধ্যে মালিক পলাতক থাকায় ৩৫ মণ চিংড়ি নিলামে ৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। পরে পাশের রাজ ফিশ ডিপোতে গিয়ে ক্ষতিকর পদার্থ দেওয়া ১২ মণ চিংড়ি পাওয়া যায়। ৫৫ মণ চিংড়ি নদীতে ফেলে নষ্ট করা হয়েছে। নিলামে বিক্রির টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.