আজও পুরো শক্তিতেই নামবে বাংলাদেশ
এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশ দল উঠে গেছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে। আগামী বছর তারা খেলবে জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো পরাশক্তিদের সঙ্গে। বাংলাদেশের মেয়েরা প্রথমবারের মতো এশিয়ার শীর্ষস্তরে খেলবে। কদিন আগেও এটি ছিল কেবল কল্পনা। স্বপ্ন পূরণের পর গ্রুপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে আজ আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটি শুরু হবে বেলা ১১টায়। এদিন বিকাল তিনটায় ইরান মুখোমুখি হবে চাইনিজ তাইপের ও সন্ধ্যায় কিরগিজস্তান খেলবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। ইরানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শুরুটা করেছে বাংলাদেশ। এরপর সিঙ্গাপুর, কিরগিজস্তানকে হারিয়ে চূড়ান্ত পর্বের স্বপ্ন দেখায় মার্জিয়া, সানজিদারা। তাইপেকে উড়িয়ে দিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে তারা। গতবারের চার সেমিফাইনালিস্ট জাপান, চীন, কোরিয়া ও থাইল্যান্ড সরাসরি খেলবে চূড়ান্ত পর্বে। গ্রুপ সেরা হয়ে ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্ব থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও আরো দুটি দল খেলবে চূড়ান্ত পর্বে। আগামী বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব। এদের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি দ্রুতই শুরু করতে চান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তবে তার আগে মহিলা ফুটবলে সফল এই কোচ মিশনটা শেষ করতে চান জয় দিয়েই। ‘ইরান আমাদের কাছে প্রথম ম্যাচে হারার পর পরের তিন ম্যাচেই দারুণভাবে জিতেছে। চাইনিজ তাইপেও আমাদের ম্যাচটি বাদ দিলে বাকি ম্যাচগুলো দারুণ খেলেছে। ওদের দু’দলের সামনেই সুযোগ আছে আমাদের সমান পয়েন্ট করার। সেই সুযোগ আমরা তাদের দিতে চাই না। শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতেই পুরোশক্তির দল নিয়েই আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবো আমরা। জয় দিয়েই মিশন শেষ করতে চাই আমি।’ এই মিশন শেষের পরই দ্রুতই চূড়ান্ত পর্বের কথা ভাবতে চান ছোটন। চূড়ান্ত পর্বে সেরা তিনে থাকলে সুযোগ থাকবে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের। এ বিষয়ে ছোটন বলেন, চূড়ান্ত পর্বে ভালো করতে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি ক্যাম্পের পাশাপাশি টুর্নামেন্টের আগে বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে বেশি বেশি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন দলটির এই কোচ।’ বাফুফে অবশ্য চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করার পরেই সেই পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছে। আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত পর্বে ভালো করার লক্ষ্যে ক্যাম্প শুরু করবে বাফুফে। নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মহিলা সাফ ফুটবল নিয়ে ছোটন বলেন, সাফে আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা কম। সেখানে খেলবে সিনিয়র ন্যাশনাল টিম। ভারত জাতীয় দলের হয়ে যারা খেলবে তাদের প্রত্যেকের বয়স ৩০-এর ওপর। সেখানে আমাদের মেয়েদের গড় বয়স ১৫। আমার মতে, সাফে ভালো করতে সানজিদা, শামসুন্নাহারদের তিন চার বছর সময় লাগবে। সাফের চেয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্ব নিয়েই বেশি রোমাঞ্চিত দলটির বেশিরভাগ ফুটবলার। তার চেয়ে বেশি রোমাঞ্চিত বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ পেয়ে। ক্যাম্প চলার কারণে গত ঈদউল ফিতর বাবা-মায়ের সঙ্গে করার সুযোগ পায়নি তুহুরা, মারিয়ারা। এবার ঈদে ছুটি পেয়ে দলের ডিফেন্ডার ও পেনাল্টি স্পেশালিস্ট শামসুন্নাহার বলেন, একে তো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, তার ওপর বাবা-মায়ের সঙ্গে বহুদিন পর ঈদ করতে যাচ্ছি- সব মিলিয়ে ঈদটা আমার কাছে একটু স্পেশালই হবে। আলাদা হবেইবা না কেন। দু’দিন আগে পুরুষ ফুটবল যেখানে লজ্জা দিয়েছে জাতিকে, সেখানে আশার আলো দেখিয়েছে ওরাই। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পুরুষ দলকে লজ্জা দিয়ে এদের বন্দনা করেছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.