আন্তর্জাতিক দিবসের সঙ্গে মিল রেখেই ৬ই এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে এ দিনটিকে ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিস ডে হিসেবে পালন করে আসছে জাতিসংঘ। এই অনুষ্ঠানে ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালের ৩৩ জন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠককে পুরস্কৃত করা হয়। যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ আহসান রাসেল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন বিভিন্ন সময়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে চলেছে। তবে আমরা এখনও জাতীয় ক্রীড়া দিবস পালন করতে পারিনি। ক্রীড়া দিবসের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করলে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে একটি প্ল্যাটফর্মে আনতে পারবো। রাসেলের এই দাবির প্রেক্ষিতে ৬ই এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ কর্তৃক ৬ই এপ্রিলকে ইন্টারন্যাশনাল ডে অব স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিস হিসেবে ঘোষণা করেছে ২০১৫ সালে। এর ব্যাখ্যায় জাতিসংঘ বলেছে, ক্রীড়ার মাধ্যমেই জাতিসংঘের শান্তি ও উন্নয়নের বাণী প্রচার করা সহজ। কারণ, ক্রীড়ার আবেদন সর্বজনীন। এর আগে অবশ্য ২৪শে জুলাইকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করতে অঘোষিতভাবে আলোচনা হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২৪শে জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে স্থানীয় কৃষ্ণনগর একাদশের বিপক্ষে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বাণী ছড়িয়ে দেয়ার জন্য প্রথম ম্যাচ খেলেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ফুটবলের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখার অনন্য নজির গড়েছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। তাই এ দিনটিকে ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব উঠেছিল। গতকাল এই অনুষ্ঠানে ৩২ জন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকের হাতে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে সাঁতারে হারুন-অর-রশিদ ও মরহুম তকবির হোসেন, শুটিংয়ে আতিকুর রহমান, অ্যাথলেটিকসে মাহমুদা বেগম, ফরিদ খান চৌধুরী, নেলী জেসমিন ও নিপা বোস (বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী), জিমন্যাস্টিকসে দেওয়ান নজরুল হোসেন, সংগঠক হিসেবে মিজানুর রহমান মানু ও এএসএম আলী কবীর জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পান। ২০১১ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া হয় জিমন্যাস্টিকসে রওশন আরা ছবি, বক্সিংয়ে কাঞ্চন আলী, কুস্তিতে আশরাফ আলী, ভলিবলে হেলেনা খান ইভা, ক্রিকেটে খালেদ মাসুদ পাইলট, শরীর গঠনে রবিউল ইসলাম (ফটিক দত্ত), হকিতে জুম্মন লুসাই, সংগঠক হিসেবে কুতুবউদ্দিন আহমেদ আকসির, আশিকুর রহমান মিকু ও শহীদ শেখ কামালকে মরণোত্তর এই পদক দেয়া হয়। ২০১২ সালে ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান, হকিতে মামুনুর রশীদ, ফুটবলে মোহাম্মদ মহসীন, খুরশিদ আলম বাবুল, আবদুল গাফফার, আশীষ ভদ্র, সত্যজিৎ দাশ রুপু, অ্যাথলেটিকসে ফিরোজা খাতুন ও উম্মে সালমা রশীদ, ব্যাডমিন্টনে নাজিয়া আক্তার যূথী, সংগঠক হিসেবে রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল ও নুরুল আলম চৌধুরী পুরস্কার দেয়া হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.