ভারতে দর পতন ঘটেছে। তাই তারা বাংলাদেশে কয়লা রপ্তানি করতে ‘গভীর আলোচনা’ চালিয়ে যাচ্ছে। এ কথা বলেছেন ভারতের কয়লাবিষয়ক সচিব অনীল স্বরূপ। ৬ই সেপ্টেম্বর এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে এই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারতের সর্ববৃহৎ কয়লাবিষয়ক কোম্পানি সিআইএল। ভারতের কয়লাখনি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে মজুদ রয়েছে ৮ কোটি টনের বেশি জ্বালানি। তার ওপর কয়লার চাহিদার পতন হয়েছে দ্রুত। রাজধানী নয়া দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সচিব অনীল স্বরূপ বলেছেন, সিআইএল এরই মধ্যে কয়লা রপ্তানি করতে বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর শলাপরামর্শ শুরু করেছে। যদি বাংলাদেশে ভারত এই কয়লা রপ্তানি করতে পারে তাহলে তাতে সিআইএলের বিক্রি বেড়ে যাবে। জুলাই মাসে বাংলাদেশে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করেছে ভারত। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় এটা সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ভারতের ওই সচিব আরো বলেছেন, আমরা কয়লা এখন আর কোথায় জমা করবো? আমাদের হাতে মজুদ আছে ৮ কোটি টনেরও বেশি কয়লা। এখন যদি আপনার মোট উৎপাদন দাঁড়ায় ৫০০ টন আর আপনার যদি মজুদ থাকে ৮ কোটি টন তাহলে বিষয়টির দিকে তাকান। বুঝতে পারবেন সিআইএল কেন আর কয়লা উৎপাদন করছে না। দ্বিতীয় কারণ হলো- আগস্টে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। এতে খনির ওপর প্রভাব পড়েছে। কয়লা উৎপাদনের টার্গেট সম্পর্কে অনীল স্বরূপ বলেন, মন্ত্রণালয় ১০০ কোটি টন উৎপাদনের টার্গেট নিয়েছে। ২ থেকে ৩ বছর পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। সরকার এই টার্গেট থেকে সরে আসেনি। বর্তমান অর্থবছরে সিআইএলের জন্য সরকার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৫৯৮ টন। তবে ২০২০ সালের মধ্যে এ উৎপাদন দ্বিগুণ করে ১০০ কোটি টন করতে চায় উৎপাদনকারীরা। বর্তমানে কয়লার চাহিদা কমে যাওয়ার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থার ওপর দৃষ্টি রেখে সরকার পরিকল্পনা নেয় না। তিনি বলেন, আমরা ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করি। কয়লার চাহিদা এমন হ্রাস পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছে না। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করি। আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৬২ শতাংশ লোড ফ্যাক্টর নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই লোড ফ্যাক্টর ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে আমরা মনে করি। এবং এই সময়ে আমাদের চাহিদা বাড়বে। এ ছাড়া বাড়তি সক্ষমতা যুক্ত হবে। কাজেই, কয়লার উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে আনার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ভবিষ্যতে যদি এর চাহিদা বাড়ে, তখন আমরা কী করব?’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.