ইজারার আগেই দখল হয়ে গিয়েছিল সিলেটের মাছিমপুরের কয়েদির মাঠ। এ কারণে গত তিনদিন ধরে ইজারা নেয়ার পর মাছিমপুরের পশুরহাটের কর্তৃত্ব পাননি বৈধ ইজারাদার সিরাজুল ইসলাম শামীম। এ কারণে ওই হাট নিয়ে ক’দিন ধরে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বিকালে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এলাকায় গিয়ে মাঠের আংশিক দখল সমঝে দিলে বৈধ ইজারাদার তাতে সায় দেননি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিলেটের কয়েদির মাঠকে এবার পশুরহাট হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দরপত্র আহ্বান করে সিলেট সিটি করপোরেশন। দরপত্র আহ্বানের পরপরই মাঠ দখলে নিয়ে গরুরহাট বসায় কয়েকটি মহল। কিন্তু ৫ই সেপ্টেম্বর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান এ মাঠের বৈধ ইজারাদার হিসেবে মাছিমপুরের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম শামীমকে পত্র দেন। ওই পত্রে তিনি ৮ই সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজানোর বসানো নির্দেশ দেন। কিন্তু ইজারা দিলেও মাঠের কর্তৃত্ব পাননি শামীম। এ নিয়ে মঙ্গলবার থেকে উত্তেজনা দেখা দেয়। করা হয় পুলিশ মোতায়েন। বুধবার সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল ওই হাটের কর্তৃত্ব বুঝিয়ে দিতে গেলেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। কারণ, মাঠে এক পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে স্বদেশ খামার নামের একটি খামারের নামে পশুরহাট বসানো হয়েছে। ওই হাট নিয়ে বাদ সেধেছেন ইজারাদার মহল। তাদের দাবি বৈধ ইজারাদাররাই এখানে হাট বসাবে। অন্য কেউ বসাতে পারবে না। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি এবং খামারের নাম বলে দখলদার পক্ষ হাট তুলে নিতে নারাজ। এদিকে, গতকাল সকাল থেকে ওই হাটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের কারণে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুরের পর হাটে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল। তারা হাটের আংশিক কর্তৃত্ব ইজারাদার পক্ষকে সমঝে দিতে চাইলে তারা তা গ্রহণ করেনি। বরং তার উল্টো জানিয়ে দিয়েছে, হাট ইজারা নিয়ে তারা লোকসানের মুখোমুখি হলে আদালতে যাবে। বৈধ ইজারাদার সিরাজুল ইসলাম শামীম গতকাল জানিয়েছেন, তিনি সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন। কিন্তু তিনি কোনো ভাবে হাটের কর্তৃত্ব পাচ্ছেন না। এদিকে, গতকাল বিকেলে হাট নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমিত করতে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে, কোরবানির পশুরহাটে জালনোট প্রতিরোধের লক্ষ্যে সিলেট বিভাগে বিতরণের জন্য উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক এর প্রতিনিধির কাছে ২৫টি ও এসএমপি কমিশনারের প্রতিনিধির কাছে ৫টি জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন বিতরণ করেছেন বাংলাদেশ সিলেটের মহাব্যবস্থাপন সিরাজুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডিআইজি এর পক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ, সিলেট রেঞ্জ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান এবং এসএমপি কমিশনারের পক্ষে সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিলেট এর সাব-ইন্সপেক্টর ওমর সানি রাসেল, বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ব্যাংকিং) বিনয় ভুষণ দাশ, যুগ্ম ব্যবস্থাপক (কোরেন্সী) মো. আতিকুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক (ডিবিআই) মো. জাবেদ আহমদ, উপব্যবস্থাপক প্রসুন কান্তি সামন্ত, সুব্রত সেনাপতি প্রমুখ। বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি: কোরবানির পশু জবাইয়ের বর্জ্য পরিষ্কার করতে ২৪ ঘণ্টার টার্গেট নিয়ে কাজ করবে সিলেট সিটি করপোরেশন-সিসিক। এজন্য নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরো বেশ কিছু পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে রাখা হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া কোরবানির পশুর চামড়া যাতে ব্যবসায়ীরা বেশি সময় নগরীতে মজুদ করে না রাখেন, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। সিসিক সূত্রে জানা যায়, কোরবানি দেয়ার পরপরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করবে সিসিক। নগরীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত করতে চায় সিসিক। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে সিলেট নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৪ জন করে স্থায়ী পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছেন। এর বাইরে আরো ২শ’ কর্মী রয়েছে সিসিক’র অধীনে। ঈদে এসব কর্মীদের কাজে লাগাবে সিসিক।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.