জন্মের পর শ্বাস না নিলে পা নাকি ওপরে ধরে নবজাতককে উল্টো করে ঝোলাতে হয়। কেউবা বাচ্চার পিঠে জোরে থাপ্পড় দেন কাঁদানোর জন্য। এসব আচরণ কিন্তু বিপজ্জনক। নবজাতকের দেহের ত্বকে যে আবরণ থাকে, তাকে অনেকে অপবিত্র মনে করেন। তাই জন্মের পরপর পবিত্র করার উদ্দেশ্যে গোসল করিয়ে দেন। আসলে গোসল করাতে হবে তৃতীয় দিন বা তারও পরে।
জন্মের পরপর মুখে মধু বা চিনি দিলে শিশুর কথা মিষ্টি হবে—এমন ভ্রান্ত ধারণাও আছে। জন্মের পর বেশি প্রয়োজন মায়ের বুকের প্রথম দুধ, যা শাল দুধ বলে পরিচিত। অনেকে নবজাতকের ঘরে আগুন কিংবা ধূপ জ্বালান। এতে শিশু অমঙ্গল থেকে রক্ষা পায় বলে তাঁদের ধারণা। কিন্তু এতে শিশুর শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন অসুখের কারণ হতে পারে।
যখন-তখন শরীরের যত্রতত্র চুমু দিলে বা কোলে নিলে নবজাতকের শরীরে রোগজীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে। বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ না ধুয়ে শিশুকে কোলে নেওয়া কিংবা চুমু দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সবারই উচিত শিশুকে স্পশ৴করার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে অনেকে শিশুর কপালে বা মাথায় ও চোখে তিলক বা কাজল দেন। এই কাজল বা তিলক থেকে চোখে সংক্রমণ হতে পারে। হতে পারে কাশি, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টও।
বহুকাল ধরে চলে আসা নানা প্রথার অনেকগুলোই হয়তো নির্দোষ, কিন্তু ক্ষতিকর অভ্যাসও কম নয়। তাই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকাই ভালো।
ডা. আবু সাঈদ
শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.