বাদী তেমন সহায়তা করেননি -তদন্ত কর্মকর্তা * সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি -বাবুল আক্তার
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন চাকরি থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসপি বাবুল আক্তার। মামলার তদন্তে এ পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করতে তাকে আবারও ডাকা হবে।
এর আগে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিনের মাথায় ২৪ জুন গভীর রাতে রাজধানীর ভুঁইয়াপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে হঠাৎ করেই বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। তখন তাকে দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) কামরুজ্জামান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, গত তিন মাসে বাদী হিসেবে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের কাছ থেকে তেমন কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করতে বাদীর সহায়তা প্রয়োজন। তাই শিগগিরই তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মুখোমুখি হতে হবে তাকে (বাবুল)।
জানতে চাইলে বাবুল আক্তার বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, যে কোনো সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছেন তিনি। মামলার বাদী হিসেবে যে ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্যগত বা অন্য কোনো সহায়তা লাগে তিনি তা দিতে বাধ্য। গত তিন মাসে মামলার তদন্তে সহায়তা না করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। আর সেটা সবাই জানে।’
এদিকে বাবুল আক্তারের পারিবারিক সূত্র জানায়, সদ্য চাকরি হারানো এই পুলিশ কর্মকর্তা এখন চাকরি খুঁজছেন। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তিনি এখন চাকরি খুঁজছেন। কোথাও চাকরি হলে বাবুল সেখানে যোগ দেবেন। তবে হারানো চাকরি ফিরে পেতে কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাবুল আক্তার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার অব্যাহতি সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি করার পর ২৪ ঘণ্টা নিরুদ্দেশ ছিলেন বাবুল আক্তার। ওইদিন বিকালেই তিনি খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া ভুঁইয়াপাড়ার শ্বশুর মোশাররফ হোসেনের বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। বুধবার সন্ধ্যার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন। এ সময়ের মধ্যে বাবুলকে নিয়ে আবার নাটকীয়তা শুরু হয়। এমনকি বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনও সকালে বাসা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তিনিও সবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছিলেন। এতে নতুন করে গুঞ্জন উঠেছিল, বাবুল আক্তার নিখোঁজ হয়েছেন। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন বাবুল রাজধানীর আজিমপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন। সেখানে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে যান। বুধবার রাতে আজিমপুরে অবস্থানের বিষয়টি বাবুল আক্তার নিজেও যুগান্তর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
এদিকে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জীবন নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। বৃহস্পতিবার তিনি যুগান্তরকে বলেন, চাকরি থেকে অব্যাহতির পর এখন বাবুলের জীবনের ওপর হুমকির বিষয়টির কথাই তারা ভাবছেন। তবে কী ধরনের হুমকি তা স্পষ্ট করেননি। চাকরি ফিরে পেতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আর কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না।’
গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের অদূরে সন্তানকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হন আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। নানা জল্পনা-কল্পনার পর মঙ্গলবার বাবুল আক্তারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.