মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের নিরাপত্তারক্ষীদের অস্ত্র ফেলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিরোধীরা বলছেন, এর মাধ্যমে আবারও হিলারিকে হত্যার জন্য উসকানি দিয়েছেন ট্রাম্প। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে হিলারির অবস্থানের কথা আবারও উল্লেখ করে ট্রাম্প গত শুক্রবার ফ্লোরিডার মায়ামিতে এক নির্বাচনী সভায় বলেন, হিলারি দেশের মানুষের অস্ত্র রাখার সাংবিধানিক অধিকার হরণ করতে চান। তিনি হিলারির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের রক্ষীদের অস্ত্র স্বেচ্ছায় ত্যাগ করার আহ্বান জানান। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয়, তাঁর (হিলারির) দেহরক্ষীদের অস্ত্র ফেলে দেওয়া উচিত। তারা নিরস্ত্র থাকুক। তারপর দেখবেন, তাঁর কী হয়।’ হিলারি শিবির রিপাবলিকান প্রার্থীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেছে, ট্রাম্প এসব কথা বলে জনগণকে খেপিয়ে তুলতে চাইছেন। ট্রাম্পের শুক্রবারের বক্তব্যকে হিলারির সমর্থকেরা তাঁর প্রতি একধরনের জীবননাশের হুমকি হিসেবেই দেখছেন। এর আগেও এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। এ কারণে সমর্থকেরা বলছেন, এটি হিলারির প্রতি আরেক দফা হত্যার হুমকি।
গত মাসে নর্থ ক্যারোলাইনায় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হিলারি অস্ত্র রাখার অধিকারসংক্রান্ত সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী বাতিল করতে চান। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি যদি আইন পরিবর্তন করতে চান, তবে আপনারা কিছুই করতে পারবেন না। যদিও দ্বিতীয় সংশোধনীর পক্ষের লোকজন এখানে আছেন। তাঁরা কিছু করতে পারেন। আমি জানি না।’ ট্রাম্পের ওই বক্তব্যকে অস্ত্রের অধিকারের পক্ষের লোকজনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেন অনেকেই। যদিও ট্রাম্প অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, তিনি সন্ত্রাসের পথে নয়, ব্যালট বাক্স ব্যবহার করে জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দেহরক্ষীদের অস্ত্র ত্যাগ করতে ট্রাম্প শুক্রবার যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার সমালোচনা করে হিলারির মুখপাত্র রব্বি মুক বলেন, ‘সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করতে সাধারণভাবে এমনকি ঠাট্টা করেও এমন কথা বলা উচিত নয়। যিনি কমান্ডার ইন চিফ হতে চান, তাঁর মুখ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এ ধরনের কথা বলতে পারেন না।
এক বিবৃতিতে মুক বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য। রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের উচিত তাঁদের প্রার্থীর এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদ করা।
সিকিউরিটি সার্ভিসের নিরাপত্তা সহযোগিতা নেওয়ার জন্য এর আগে ট্রাম্প হিলারির বিরুদ্ধে ‘ভণ্ডামির’ অভিযোগ করেছিলেন। তিনি টুইটারে বলেন, ‘কুটিল হিলারি সব অস্ত্র বাতিল করতে চান। কিন্তু নিজে অস্ত্র হাতে থাকা নিরাপত্তারক্ষী পরিবেষ্টিত থাকেন।’
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষে। আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতার জন্য সমাজে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে চলায় এ বিষয়ে জনমতও গড়ে উঠেছে। তবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকারসংবলিত সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীর বিরোধিতা করেননি তিনি। গত জুলাই মাসে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্মেলনে তিনি স্পষ্টই বলেন, ‘আপনাদের অস্ত্র নিয়ে নেওয়ার পক্ষে আমি নই।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.