আলিফ
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দেড় বছরের শিশু আলিফ এখনো কাঁদছে। আর মাঝে মাঝেই আঁতকে উঠছে। ঠিকমতো খাচ্ছে না। তরল খাবার দিলে মুখে নিয়েই ফেলে দিচ্ছে। গতকাল রোববার মুঠোফোনে শিশুটির চাচি আঞ্জুয়ারা এ কথা জানিয়েছেন। গত শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ইচাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় আলিফ। ওই ঘটনায় তার মাসহ নিহত হন পাঁচজন। আহত হন তার বাবা, চাচা, চাচিসহ ৩৫ জন। তাঁদের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক। তাঁরা কুড়িগ্রাম থেকে বাস ভাড়া করে ঢাকায় আসছিলেন। পথে ইটবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে তাঁদের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আলিফদের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার কুটিপাড়া গ্রামে। আঞ্জুয়ারা বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে আলিফের আহত বাবা ও চাচাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেখে তিনি (আঞ্জুয়ারা) সালমার মরদেহ ও আলিফকে নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। গতকাল সকালে তাঁরা বাড়ি পৌঁছান। দুপুরে জানাজা শেষে বাড়ির উঠানে সালমার মরদেহ দাফন করা হয়। তিনি বলেন, শনিবার থেকেই আলিফ ঠিকমতো খাচ্ছে না। ভয়ে আঁতকে উঠছে। চিকিৎসকেরা যে ওষুধ দিয়েছেন, তা-ও ঠিকমতো খাওয়ানো যাচ্ছে না। ঘুমের ঘোরে কিছুক্ষণ পরপরই আঁতকে উঠে মাকে ডাকছে সে। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বাবা-মা হাসপাতালে, ছেলেকে দাফন: ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে কুড়িগ্রামের উলিপুরের গোড়াইপিয়ার গ্রামের আমিনুর ইসলামের ছেলে বায়েজিদ (৭)। আহত হন আমিনুর ও তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম এবং তাঁদের বড় ছেলে রহিম বাদশা। আমিনুরের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও রহিমার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুমুদিনী হাসপাতালে কথা হয় আমিনুর ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল ছোট ছেলে বায়েজিদের লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এর চেয়ে কষ্ট আমার আর কী হতে পারে।’ মির্জাপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিতাস চন্দ্র রায়ের বাবা কাজল চন্দ্র রায় বাদী হয়ে গতকাল মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করেছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.