উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পো শহর পুনর্দখলের প্রচেষ্টায় নতুন করে বিমান হামলা শুরু করেছে সিরীয় বাহিনী। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সিরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে আলেপ্পোর দখল নেয়ার। সে কারণেই করা হয়েছে শতাধিক বিমান হামলা। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠনের দুইটি কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামলায়। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা, বিবিসি। খবরে বলা হয়, সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির অবসানের পর নতুন করে হামলা শুরু করেছে সরকারি বাহিনী। রাশিয়া সমর্থিত সিরীয় সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবারের শেষভাগে জানায়, বিদ্রোহীদের দখল থেকে আলেপ্পোকে মুক্ত করতে নতুন করে অভিযান শুরু করা হবে। এরপর শুক্রবারই শুরু করা হয় বিমান হামলা। আলেপ্পোর আশেপাশে কমপক্ষে ১৫টি স্থানে শতাধিক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, এসব হামলায় উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের মধ্যে চলমান হামলা থেকে তারা বেসামরিক জনগণকে সহায়তা করে যাচ্ছিল। এমন একটি সংগঠন হোয়াইট হেলমেটের দুইটি কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, রাশিয়ার সহায়তায় ব্যাপকভাবে হামলা চালানো হচ্ছে আলেপ্পোতে। এখন হামলা চলছে আলেপ্পোর পূর্বদিকে এবং এই অঞ্চলটি খালি করে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সিরিয়ার রাষ্ট্রয়াত্ত টিভি চ্যানেলে সরকারের পক্ষ থেকে আলেপ্পো অধিবাসীদের ‘সন্ত্রাসীদের অবস্থান’ থেকে ‘দূরে থাকার’ জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেট জানিয়েছে, শুক্রবার সকালেই কয়েক ডজন বিমান হামলা চলেছে। তবে এই হামলায় স্থল সামরিক বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্রোহীসহ বেসামরিক ব্যক্তিদের জন্যও পালানোর পথ রেখেই হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি পালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্মতি পাওয়ার পর সিরীয় সরকারের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়া হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চলাকালেই সোমবার জাতিসংঘের একটি ত্রাণবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলার পর সিরিয়ায় জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের ত্রাণ তৎপরতা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। দুই দিন পরই অবশ্য জাতিসংঘ পুনরায় ত্রাণ তৎপরতা শুরুর ঘোষণা দেয়। ত্রাণবহরে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী করে রাশিয়াকে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করা হয়। ওই হামলার পরপরই যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যায়। সিরিয়ার সরকার সমর্থিত বাহিনী পুনরায় হামলা শুরু করে। মার্কিন ও রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে পুনরায় সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও রাজনৈতিক আলোচনা শুরুর বিষয়ে বৈঠক করেন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সিরিয়ায় সংস্থাটির বিশেষ দূত স্টেফান ডি মিসতুরা বলেন, ‘যা ঘটছে তা হলো আলেপ্পো আবার আক্রান্ত হয়েছে এবং সবাই আবারও সংঘর্ষের পথেই ফিরে যাচ্ছে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.