২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে আজ। শেষ মুহূর্তে জোরেশোরে প্রস্তুতি নিলেও মেলা মাঠের অনেক কাজ বাকি রয়েছে এখনও। এর মধ্য দিয়েই সকালে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুুক্ত করে দেয়া হবে। গতবারের মতোই রাখা হয়েছে মেলায় প্রবেশ ফি। এবারের মেলায় ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে বাড়ানো হয়েছে স্টল সংখ্যা। পাশাপাশি আগত দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে মেলার আয়োজন করছে।
শনিবার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, এর মূল ফটক নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের আদলে। ভেতরে স্টল বুঝে পাওয়া মালিকরা নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী ডেকোরেশনের কাজে ব্যস্ত। হাতিল ফার্নিচার, আকতার ফার্নিচার, প্রাণ-আরএফএল, যমুনা ইলেকট্রনিক্সের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করছে। এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। তবে অধিকাংশ সাধারণ স্টলের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। স্টলের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি দোকান মালিক ও নির্মাণ শ্রমিকরা। এছাড়া মেলায় ইকোপার্ক, শিশু পার্ক, এটিএম বুথ, মসজিদ, প্রতিবন্ধীদের জন্য অটিজম সেন্টার, মাদার কেয়ার সেন্টার, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, এবার ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে বাণিজ্য মেলার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। ১৬টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ৬৪টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৩৭টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, জেনারেল স্টল ও ফুড শপসহ ৫৮০টি স্টল নির্মাণ করা হয়েছে। গতবার এ সংখ্যা ছিল ৫৬৫। এছাড়া মেলায় বিদেশী অংশগ্রহণ সংখ্যা বাড়ছে।
ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, জাপান, আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশের ব্যবসায়ীরা মেলায় অংশ নিতে পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছেন। আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় এবার সিসি টিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আনসার, পুলিশ, বিজিবি-র্যাবের পাশাপাশি কর্মরত থাকবেন সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা।
মাসব্যাপী মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। এবার মেলার প্রবেশ ফি গত বছরের মতোই রাখা হয়েছে। ছোটদের জন্য ২০ এবং বড়দের টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা রাখা হয়েছে। এবারের মেলার প্রধান আকর্ষণ টিকিট পাওয়া যাবে অনলাইনে। প্রবেশ গেট রাখা হয়েছে দুটি। ভিআইপিদের জন্য আলাদা গেট রাখা হয়েছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের গাড়ি পাকিংয়ের স্থানও বাড়ানো হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, মেলার আয়াতন ৩১.৫৩ একর। এবারের বাণিজ্য মেলায় সব মিলিয়ে স্টল থাকবে ৫৮০টি। স্টল বরাদ্দ নিয়ে আবেদন পড়েছে ব্যাপক হারে। স্টল বরাদ্দের মোট আবেদন পড়েছে এক হাজার ২৭টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে জেনারেল স্টলের জন্য। জেনারেল স্টলের জন্য লে-আউট প্ল্যান দেয়া হয়েছে ২৫৩টি। এর বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭১৭টি। ফুড স্টলের জন্য লে-আউট প্ল্যানে মোট স্টল রাখা হয়েছে ২৪টি। এর বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭৫টি। স্টল বরাদ্দ দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্মকর্তাদের। আর প্যাভিলিয়ন ও প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন বড় বড় কোম্পানিগুলো আগে থেকেই বুকিং দিয়ে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ডেকোরেশন করে নিয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.