আকাশ (সংগৃহীত পুরোনো ছবি)
গাজীপুরের নোয়াগাঁও এলাকার পাতারটেকে পুলিশের অভিযানে নিহত সাত সন্দেহভাজন জঙ্গির একজন ফরিদুল ইসলাম ওরফে আকাশ। পুলিশ বলছে, এই আকাশ জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। পুরো পরিবার জেএমবির সঙ্গে যুক্ত। আকাশকে অনেক দিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। অভিযানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে, তামিম চৌধুরীর পর যে নেতৃত্ব দিত, ছদ্মনাম হোক আর তাদের সাংগঠনিক হোক, তার নাম হচ্ছে আকাশ।’ ফরিদুল ইসলাম ওরফে আকাশের (২৫) বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ইতলী গ্রামে। গতকাল রাতে ওই গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আকাশ সিরাজগঞ্জের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা করেছেন গত বছর। তাঁরা দুই ভাই, তিন বোন। গত ৫ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আকাশের মা ফুলেরা খাতুন (৪৫), দুই বোন সাকিলা খাতুন (১৮) ও সালমা খাতুনকে (১৬) গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় ওই বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই ও একটি কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়। অপর দুই ভাইবোন ৮ ও ৯ বছর বয়সী। বাবা আবু সাঈদ পলাতক। সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমদ জানান, আকাশের মা ও বোনেরা জেএমবির সদস্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছিলেন। তাঁরা এই সংগঠনের হাইকমান্ডের নির্দেশ পেলেই আত্মঘাতী হামলার উদ্দেশ্যে হিজরতে যেতেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করে ফেলেছিলেন। গ্রেপ্তারকৃতদের সবাই জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য বলে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন। এখন তাঁরা কারাগারে আছেন।
গতকাল শনিবার সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওহেদুজ্জামান বলেন, ফরিদুল জেএমবির একজন উচ্চপর্যায়ের নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি মাঝেমধ্যে গোপনে বাড়ি আসতেন। সম্প্রতি একটি স্থানে গোপন বৈঠক করার সময় পুলিশ অভিযান চালায়। দলের অন্য তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও আকাশকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিকে অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পরই ঢাকা মহানগর পুলিশের অনলাইন নিউজ পোর্টালে ফরিদুল ইসলাম আকাশের নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, নিহত ফরিদুল ইসলাম ওরফে আকাশ ওরফে প্রভাত ‘নিও জেএমবি’র ঢাকা বিভাগের অপারেশন কমান্ডার ছিলেন।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আকাশ শোলাকিয়া হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল। এ ছাড়া নব্য জেএমবির ঢাকা বিভাগের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.