গোটা বাংলাদেশ আজ নির্যাতিত, খাদিজা তার প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে নারী-শিশুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা উল্টালেই কোনো না কোনো নির্যাতনের খবর আমাদের দেখতে হচ্ছে। আজ কেবল খাদিজা, রিসা ও তনুরাই নির্যাতিত নয়, গোটা বাংলাদেশের মানুষ আজ ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত হচ্ছে। গোটা বাংলাদেশ আজ নির্যাতিত খাদিজা, রিশা, তনুর প্রতিচ্ছবি। সিলেটে হামলার শিকার কলেজছাত্রী খাদিজাকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। আলাল বলেন, বিচার যদি শুধু বিরোধী দলের বেলায় হয় তাহলে খাদিজা, তনুর মতো ঘটনা থামবে না। উল্টো আরো ঘটতেই থাকবে। সরকার নিজেদের লোকদের বিচার করছে না বলেই একের পর এক হত্যা হচ্ছে। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চাপাতি যখন ছাত্রলীগ নেতা বদরুলদের হাতে থাকে তখন সেটা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। অন্যদের হাতে থাকলে তারা হয় জঙ্গি। এই হলো বর্তমানে দেশের অবস্থা। আওয়ামী লীগ জঙ্গি নিধনের নাটক করছে মন্তব্য করে আলাল বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) যখন বিপদ এবং জনরোষে পড়ে তখনই জঙ্গি নিধন নাটক করে। গুলশানে যে জঙ্গি হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতার ছেলে ছিল। জঙ্গিদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের কোনো পরিচয় দিতে পারছে না। সরকার বলছে জঙ্গিদের পরিচয় পেলে জানাবে। তাহলে যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা কারা? তাদের যদি পরিচয়ই না জানেন তাহলে কি করে বুঝলেন তারা জঙ্গি। সরকার জঙ্গিদের পরিচয় ইচ্ছে করে দিচ্ছে না। কারণ, জঙ্গিদের পরিচয় দিলে আবার অন্য কিছু বেরিয়ে আসে নাকি এই ভয়ে। নিশ্চয়ই এর মধ্যেও কিন্তু রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আলাল বলেন, আপনি সংসদে দাঁড়িয়ে বদরুলকে দোষারোপ না করে বরং মানুষকে দোষারোপ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে লজ্জা হয়। অথচ বিডিআর বিদ্রোহের সময় আপনার আদেশের অভাবে সেনাবাহিনী অভিযান চালাতে পারেনি। যার ফলে আমরা ৫৭ জন সেনাবাহিনীর ভাইদের হারিয়েছিলাম। আলাল বলেন, দেশে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখনই মানুষ নানামুখী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দেশে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাজেদুল ইসলাম সুমনের মতো সুপরিচিত নন্দিত নেতারা দিনের আলোতে গুম হয়ে গেলেও সরকার এ বিষয়ে এখনো কিছু জানে না। গত ৭ বছরে সারা দেশে সহস্রাধিক খুন হয়েছে। আর ৫ শতাধিক গুম হয়েছে। সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এই পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার গণতন্ত্রকে উন্নয়নের সঙ্গে তুলনা করছে। এক সময়ে আইয়ুব খান যেমন উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে পিছনে ফেলেছিল, বর্তমান সরকারও তা-ই করছে। তাহলে কি এখন এ সরকার আইয়ুব খানের পথেই চলছে? এ সময় তিনি রামপাল ইস্যুতে দেয়া আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন। সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের হামলায় মারাত্মক আহত খাদিজা আক্তারকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে সুচিকিৎসা ও লক্ষ্মীপুরে ফারহানা আক্তারসহ সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দাবি জানান তিনি। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমতউল্লাহ, আবেদ রাজা, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আ স ম মোস্তফা কামাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.