১৩ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে ফেললো ইংল্যান্ড। চট্টগ্রামে রান তাড়া করার রেকর্ড গড়েই জিতলো সফরকারীরা। বৃষ্টি কোন বাধা না হলেও সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের। প্রথম ওয়ানডেতে সুযোগ নষ্ট করার খেসারত দিতে হলো বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিতে সমতা ফিরিয়ে ২৭৭ রান করেও জিততে পারলো না মাশরাফি বাহিনী। শফিউলের শেষ ওভারে ছক্কা মেরে সব উত্তাপ নিভিয়ে দেন ক্রিস ওকস। অপর প্রান্তে ৪৭ রানে থাকা স্টোকসকে ফিফটি করতে দিলেন না তিনি। এ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে খেলা ছিনিয়ে নেন স্টোকসই। প্রথম খেলায় সেঞ্চুরিকরা স্টোকসই হলেন ম্যান অব দ্য সিরিজ। ম্যানর অব দ্র ¤্রাচ হয়েচেন চার উইকেট নেয়া আদিল রশিদ। ওকস অপরাজিত থাকলেন ১৮ বলে ২৭ রান করে। ২৪ বলে তাদের দরকার ছিল আর ২৭ রান। অভিজ্ঞ স্টোকস আর ওকস হাল ধরে জয়ের দিকে চলেছে। বাংলাদেশের বোলাররা শেষ চেষ্টা করছেন। মাশরাফির ১০ ওভার শেষ। শফিউল আর তাসকিন এখন ভরসা। মঈন আলীকেও ফেরালেন মাশরাফি। ইংল্যান্ড ২৩৬/৬। এর আগে অধিনায়ক মাশরাফি ভাঙেন স্টোকস-বাটলার জুটি। ২৫ রান করা বাটলারকে বোল্ড করেন মাশরাফি। ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২২৭/৫। পঞ্চম উইকেটে জস বাটলার আর বেন স্টোকস ঠান্ডা মাথায় ইংল্যান্ডকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৪০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ২২১/৪ রান। ১০ ওভারে তাদের চাই ৫৭ রান। ১৭৯ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ার পর এ জুটি ৪২ রান যোগ করে ফেলেছে। অবস্থা বুঝে দর্শকরাও মাঠ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান পেসার শফিউল। পরপর দুই ওভারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা বেয়ারস্টো ও বেন ডাকেটকেকে আউট করেন শফিউল। ৩৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১৯২/৪। ডাকেট আউট হন ৬৩ রান করে। ২৯ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৪। জয়ের জন্য ২১ ওভারে চাই ১২৪ রান। হাতে আট উইকেট অক্ষত। বিলিংস আউট হলেও বেন ডাকেট দৃঢ়তার সঙ্গেই এগিয়ে নিচ্ছেন দলকে। ৫৬ বলে ৫০ করে ফেলেন প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া ডাকেট। ৬২ রান করে মোসাদ্দেকের বলে আউট হলেন বিলিংস। ২৪.৩ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১২৭/২। ২৫ বছর বয়সী স্যাম বিলিংসের এটিই প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। আগের পাঁচ ওয়ানডেতে তার সর্বোচ্চ ছিল ৪১। ৫০ বলে ৫০ করার পথে তিনটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ২০ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১০৮/১। ১৮ ওভার শেষে ইংল্যান্ড মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে করেছে ১০২ রান। বিলিংস ৪৭ আর ডাকেট ২৩ রানে ব্যাট করছিলেন। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ভাঙেন নাসির হোসেন। ৩২ রান করে ভিঞ্চ নাসিরে বলে লেগবিফোর উইকেট হন দলীয় ৬৩ রানে। ২৭৮ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডকে প্রথম ওভারে মাশরাফি কোন রান দেননি। তবে দ্বিতীয় ওভারে শফিউলের কাছ থেকে ৮ রান নিয়ে নিয়েছে তারা। ৫ ওভারে সংগ্রহ ছিল ২৬/০। এর আগে টসে হেরে ব্যৗাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৫০ ওভারে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২৭৭। মুশফিক ৬২ বলে সর্বোচ্চ ৬৭ রান আর মোসাদ্দেক ৩৯ বলে ৩৮ করে অপরাজিত থাকেন। সপ্তম উইকেটে মুশফিক-মোসাদ্দেক জুটি অবিচ্ছিন্ন থাকেন ৮৫ রান তুলে। বাংলাদেশের ইনিংসের বড় জুটিই এটি। আর চট্টগ্রামে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক সংগ্রহ। এর আগে ২৮১ রান করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ তে। বাংলাদেশ ইনিংসে তিনটি ছক্কার পাশে চার মারে ২২টি। চট্টগ্রামের এ মাঠে এত রান তাড়া করে আর কোন দল জিততে পারেনি। ৫০ করার আগের বলেই ৪৬ রানে জীবন পান মুশফিকুর রহীম। এরপরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের প্রথম ফিফটি করেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিক, ৫২ বলে ৫১। ১৬৪ ওয়ানডেতে এটি মুশফিকের ২৩তম ফিফটি। তার চার হাজার রানের (৪০৭৬) মধ্যে চারটি সেঞ্চুরিও রয়েছে। ৪৮ ওভারে বাংলাদেশ ২৫২/৬। ৪৫ ওভারে ছিল বাংলাদেশের স্কোর ২২৭/৬। মুশফিক ৪৭ বলে ৩৬ আর মোসাদ্দেক। মুশফিক সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঝ্চুরি করেন। এরপর সাত ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল আফগানদের বিপক্ষে তৃতীয় খেলায় ৩৮। ই্ংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে করেন ১২ আর ২১। সেঞ্চুরি বাদ দিলে ২১ ইনিংস পর ফিফটি। এর আগে শেষের দিকে এসে ছন্দ পতন হয় বাংলাদেশ ইনিংসের। ১৬ রানের ব্যবধানে তিন উইকেটের পতন। আদিল রশিদের নবম ওভারের প্রথম বলে ফুলটস বল হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন নাসির। তিনিও ১০ বল খেলে করেন ৪ রান। ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে এ লেগ স্পিনার নেন চার উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেও তিনি চার উইকেট নেন। তিন খেলায় নিলেন ১০ উইকেট। ৩৯ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১৯৬/৬। এর আগে সাকিব চলে গেলেন কিছু করার আগেই। ১০ রানে চার করে মঈন আলীর বলে স্টাম্পড। স্পিনেই ঘায়েল হচ্ছে বাংলাদেশ। স্টোকসের পর তিন উইকেট নিলেন রশিদ। আর একটি মঈন আলী। ভালই খেলছিলেন সাব্বির রহমান। মুশফিকের সঙ্গে রানের গতি বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। ৫০ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু মাত্র ১ রানের জন্য তিনিও মিস করলেন ফিফটি। ৪৯ রান করে তিনি আদিল রশিদের তৃতীয় শিকার। এটিও তার ওভারের পঞ্চম বল। ৩৭ ওয়ানডেতে এটি রশিদের ৫০তম উইকেট। আর ২৯ ওয়ানডেতে ২৫ বার ব্যাট করে ৪০ থেকে ৪৯এ ছয়বার আউট হলেন তিন ফিফটির মালিক সাব্বির। বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭৬/৪। ৩০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫৮/৩। সাব্বির ৩৪ আর মুশফিক ১৩ রানে ব্যাট করছিলেন।ছক্কা দেয়ার বিস্ময় না কাটতেই পরের বলে তুলে নিলেন মাহমুদুল্লাহর উইকেট। এটিও ওভারের পঞ্চম বলে। আদিল রশিদ ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। ২৫ ওভার শেষে দলের রান ১২২/৩। ৭ বলে ৬ রানই তোলেন আগের খেলায় ৭৫ করা মাহমুদুল্লাহ। ২৩ ওভারে আদিল রশিদকে এনেই সফলতা পেলো ইংল্যান্ড। ৪৫ রান করে আউট তামিম। আর বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০৬/২। সাব্বিরের পাশে আসেন মাহমুুদুল্লাহ। ২১ ওভার শেষে ৩৭ রান করে ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৫০০০ রান পুরো করতে চাই ১ রান। পরের ওভারে ওকসের বলে চার মেরে লক্ষ্যে পৌছে যান চট্টগ্রামের ছেলে তামিম। ৬৮ বলের ইনিংসে মাত্র পাঁচটি চার মারেন তিনি। মাত্র চার রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি করতে পারলেন না ইমরুল কায়েস। ৫৮ বলে ৪৬ রান করে বেন স্টোকসের শিকার হন এ ওপেনার। ১৯ ওভার শেষে দলের রান তখন ৮০। ২০ ওভার শেষে বাংণাদেতশ ৮৬/১। তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাব্বির। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে এবার শুরুটা বেশ দারুণ হয়েছে। মাত্র ১৪ ওভারে তামিম ইমরুল জুটি তুলেছে ৬০ রান। তামিম শুরুটা ধীরে করলেও ক্রমেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন।্ইমরুল ৩৬ আর তামিম ২৫ রানে ব্যাট করছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং জুটি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃষ্টির শঙ্কা কাটিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। টানা তৃতীয় খেলায় টসে হেরেছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে অপরিবর্তিত রয়েছে বাংলাদেশ স্কোয়াড। ইংল্যান্ড ওপেনার জেসন রয়ের জায়গায় স্যাম বিলিংস এবং উইলির পরিবর্তে খেলাচ্ছে লিয়াম প্লাঙ্কেটকে। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টির পর আজ সকাল থেকেও বৃষ্টি থাকায় ম্যাচ শুরু নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। দুপুরে বৃষ্টি থামায় উইকেট উন্মুক্ত করা হয়। আম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন করে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.