৯ই অক্টোবর, রোববার। বিকাল সাড়ে চারটা। ব্যস্ত সোনারগাঁও মোড়। মানুষের তীব্র ভিড়। বাসগুলোর কোনটাই পুরো থামছে না। চলন্ত বাসে উঠার জন্য লড়াই চলছে। কেউ উঠতে পারছেন। কেউ পারছেন না। সবচেয়ে বেশি বিপাকে নারীরা। ভিড় ঠেলে বাসের কাছে পৌঁছানোই দায়। ধাক্কাধাক্কির ভোগান্তি। বাসের হেলপারের অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ। কিছু আগে প্রায় একইরকম দৃশ্যের দেখা মেলে ফার্মগেটে।
রোজকার দেখা যায় এই দৃশ্য। দিনের পর দিন। বছরের পর বছর। এই হয়রানি। খোদ রাজধানী ঢাকায়। এই শহরে প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে নারীদের রাস্তায় বের হতে হয়। কেউ কর্মজীবী, কেউ শিক্ষার্থী। প্রতিনিয়ত এসব নারীর বড় অংশকেই কোনো না কোনো হয়রানির মুখে পড়তে হয়। এসব অবভ্যতা ভেঙে কিংবা চুরে দেয় নারীর মনোজগত। তছনছ করে দেয় বিশ্বাস। নানা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন অনেকে। বেসরকারি সংস্থা একশন এইডের এক গবেষণায় দেখা যায় হয়রানির নানা চিত্র।
রাস্তাঘাটে চলাচল করা যেন এক ধরনের যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের কথা শোনালেন এক নারী। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। পুরান ঢাকা থেকে নিয়মিত ধানমন্ডি আসা-যাওয়া করেন তিনি। বলেন, বাস পেতে রীতিমতো লড়াই করতে হয়। ভিড় ঠেলে বাসে উঠা খুবই কষ্টকর। হেলপারদের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণতো আছেই। ওরা পিঠে হাত দেয়। নিষেধ করলেও শোনে না। বাসে উঠার পর বসার আসন পাওয়া যায় না বেশিরভাগ দিন। মিনিবাসে তিন চারটি এবং বড় বাসে নয়টি সংরক্ষিত আসন থাকলেও পুরুষ যাত্রীরাও ওইসব আসনে বসে থাকেন। আর উঠতে বললে বলেন, সমান অধিকার চাইলে দাঁড়িয়ে চলাফেরা করতে শিখুন। তিনি বলেন, বাসে ভিড় থাকলে হেলপাররা সিট খালি নেই বলে তুলতে চায় না। তাদের ধারণা নারী যাত্রীরা বাসে উঠতে-নামতে সময় বেশি নেয়। দাঁড়িয়ে যেতে বেশি জায়গা লাগে। সন্ধ্যার পর বাসে উঠা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। কারণ সে সময় রাজধানীর ‘সিটিং’ বাস সার্ভিসগুলোও লোকালের মতো যাত্রী নেয়া শুরু করে। তাই প্রথমেই একজন নারী যাত্রীকে বাসের দরজা পর্যন্ত পৌঁছাতে হয় অনেক পুরুষ সহযাত্রীর ধাক্কা খেয়ে। বাসে ওঠার পর দরজার কাছের ভিড় ঠেলে ইঞ্জিনের উপর এক থেকে দেড় ফুট উঁচু আসনে উঠতে রীতিমতো কোমর বাঁধতে হয়। কোনো হতভাগ্য যাত্রী যদি নারী আসন না পান তাহলে তাকে সেগুলোর পাশেই ইঞ্জিনের কাছাকাছি কোনো জায়গায় দাঁড়াতে হবে এটাই রাজধানীর বাস সার্ভিসের অলিখিত এক নিয়ম।
একটি নামকরা কলেজের ছাত্রী উম্মে হাবিবা। তার অভিজ্ঞতার বিবরণ পাওয়া যায় সম্প্রতি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। উম্মে হাবিবা বলেন, আমার বাসা থেকে কলেজ বেশ দূর। বাসে করে যাই। রোজ অস্বস্তি নিয়ে বাস থেকে উঠি, নামি। হেলপার শরীরের নানা জায়গায় হাত দেয় যেন সে নামতে-উঠতে সহায়তা করছে। কিন্তু বাস ঠিকমতো স্ট্যান্ডে থামলে মেয়েরা দিব্যি ওঠানামা করতে পারে; গায়ে হাত দেয়ার ছুঁতা কেউ পাবে না। তিনি বলেন, আমার থেকে কমবয়সী একজন ছেলে সেদিন বাসের দরজায় হেলপারগিরি করছিল। আমি দেখলাম, সে ইচ্ছে করে চালককে নির্দিষ্টস্থানে থামাতে বললো না। চলন্ত গাড়ি একটু ধীরগতি করে আমাকে নামানোর সময় পুরো পিঠে হাত দিয়ে কটূক্তি করে বাস টান দিলো। এ ধরনের ঘটনা ঘৃণা তৈরি করে রোজ। নিজের ভেতরের আত্মবিশ্বাস ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
ইশরাত জেরিনের কর্মস্থল বনানীতে। মানবজমিনের কাছে তিনি বর্ণনা করেছেন তার প্রাত্যহিক চলার অভিজ্ঞতা। প্রতিদিন প্রায় চার ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয় কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে। এই দীর্ঘ যাত্রা মোটেও সুখকর নয় এই নারীর জন্য। ইশরাত জানান, ধানমন্ডি থেকে বনানী যেতে সরাসরি কোনো বাস নেই। ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে হয় বনানী পর্যন্ত। অফিস আওয়ারে বাস, লেগুনায় ওঠতে পারা রীতিমতো অলিম্পিক জয় করার অবস্থা। বনানী যেতে হলে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত লেগুনায় গিয়ে সেখান থেকে বাসে উঠতে হয়। কিছুদিন যাওয়ার পর যখন বিরক্ত হয়ে উঠি তখন রুট পরিবর্তন করি। সিটি কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে উইনার বাসের জন্য অপেক্ষা করি। প্রতিদিন বাস পেতে দেরি হবে জেনে প্রায় এক ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে বের হই। এর পরও সব দিন বাস পাই না। ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে সিএনজিতেও পোষাতে পারি না। প্রতিদিন বাসে চলাচল করতে কি ধরনের সমস্যায় পড়েন জানতে চাইলে ইশরাত বলেন, প্রথমত ভিড় ঠেলে বাসে উঠাই সমস্যা। হেলপাররা মহিলা তুলতে চায় না। দরজায় হাত দিয়ে রাখে যেন উঠতে না পারি, জোর করে উঠতে গেলে পিঠে, কোমরে হাত পড়ে। বাসে মহিলাদের সংরক্ষিত আসনের কথা উল্লেখ করে ইশরাত বলেন, নামে মাত্র মহিলা সিট লিখে রাখলেও পুরুষ যাত্রীরাই বসে থাকেন। সামনে গিয়ে দাঁড়ালে নিজে থেকে সিট ছেড়ে উঠতে চায় না। আর যদি বলা হয় মহিলার সিট উঠে যেতে হবে তখন অনেক তর্কাতর্কি করার পর সিট ছাড়েন। আর অফিস থেকে ফেরার সময় এক ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করেও বাসে উঠতে পারি না। যাত্রীর চাপ এত বেশি থাকে তখন বাসের ভেতর থেকে অন্য পুরুষ যাত্রীরা বলে দেন যেন মহিলা না উঠায়। ইশরাত বলেন, সপ্তাহের দুই-এক দিনই বাসের সিটে বসে যেতে পারি। অন্য সময় দাঁড়িয়েই যেতে হয়।
নিয়মিত বাসে চলাচল করেন রিনা আক্তার। চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অফিস মিরপুরে, থাকেন পূর্ব গোড়ান। প্রতিদিন তাকে বাসে যাতায়াত করতে হয়। রিনা বলেন, এক থেকে দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক সময় ভিড়ের জন্য বাসে উঠতে পারি না। তাছাড়া বাসের হেলপার নারী যাত্রীদের গাড়িতে নিতেই চায় না। মেয়ে দেখলেই বলে সিট খালি নাই। প্রতিদিন সিএনজিতে চলার অবস্থাও আমার নেই। অনেক সময় যৌন হয়রানিরও শিকার হতে হয় বলে জানান তিনি। রিনা বলেন, কিছু পুরুষ যাত্রী সুযোগ পেলেই শরীরে হাত দেয়, ইচ্ছা করে ধাক্কা দেয় এমনকি গায়েও হেলে পরে। এ ছাড়া প্রায়ই হেলপার-বাসচালকরা মেয়েদের অপদস্ত করে। প্রতিদিনের যাতায়াতের এ ভোগান্তির প্রভাব পড়ছে তার ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনেও। প্রায়ই ভাবেন চাকরি ছেড়ে দেবেন। কিন্তু নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনে তাও আর হয়ে ওঠে না।
একশন এইডের গবেষণা: বেসরকারি সংস্থা একশন এইডের এক গবেষণায় দেখা যায়, পাবলিক স্পেসে বহুমাত্রিক এবং ব্যাপক হয়রানির শিকার হয় নারী। গবেষণায় অংশ নেয়া উত্তরদাতাগণ যে ধরনের হয়রানি চিহ্নিত করেছেন তার মধ্যে প্রধান ৫টি হলো: রাস্তাঘাটে কুমন্তব্য/বাজে কথা (৮৬% এর মতে), শীষ/টিটকারী/অশোভন ইঙ্গিত (৪৬% এর মতে), অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ/গায়ে হাত দেয়া, ছিনতাইয়ের আশংকা, দুর্ঘটনার ভয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, শহর এলাকায় রাস্তাঘাটে চলাচলের একটি বড় সমস্যা হলো নিরাপত্তাহীনতা, যা নানা আর্থ-সামাজিক কারণে পুরুষের চাইতে নারীকেই বেশি প্রভাবিত করে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে নরীদের নিরাপত্তাহীনতার জন্য কোন জিনিসগুলো প্রধানত দায়ী এই প্রশ্নের জবাবে উত্তরদাতাগণ যেসব ঝুঁকি চিহ্নিত করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো যৌন হয়রানি। ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে শতকরা ৪৮ ভাগ উত্তরদাতার মতে যৌন হয়রানির বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরই তারা গুরুত্ব দিয়েছেন জেন্ডার সুলভ নাগরিক সুবিধার অপ্রতুলতার উপর যেমন: অপর্যাপ্ত সড়ক বাতি, অপ্রতুল মহিলা বাস এবং সক্রিয় ও কার্যকর পুলিশের অভাব ইত্যাদি। উত্তরদাতাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তারা গত তিন মাসে পাবলিক স্পেসে কী ধরনের হয়রানিতে ভুগেছেন। দেখা যায় উত্তরদাতাদের একটি বিরাট অংশ কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতন / হয়রানিতে ভুগেছেন। যেমন শতকরা ৮৪ জন নারীকে বখাটেদের নিকট থেকে কটূক্তি ও অশোভন আচরণের সম্মুখীন হতে হয়েছে। অর্ধেকের ও বেশি নারীকে রাস্তাঘাটে কুপ্রস্তাব শুনতে হয়েছে, সর্বোপরি ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতাকে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ বা গায়ে হাত দেয়ার মতো হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আরো হতাশার দিক হলো একজন নারী কিন্তু একাধিকবার একাধিক ধরনের যৌন হয়রানিতে ভুগেছেন, যেমন গড়ে একজন নারী তিন মাসে ৪ থেকে ৫ বার অশোভন আচরণের সম্মুখীন হয়েছেন, একইভাবে ৪ থেকে ৫ বার অপরিচিতের কাছ থেকে কুপ্রস্তাব পেয়েছেন এবং ২ থেকে ৩ বার অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শের মতো হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন। যৌন হয়রানি বা নির্যাতন কোনো বিশেষ বয়সের নারীর ক্ষেত্রেই ঘটেনা। কিশোরী বা প্রাপ্ত বয়স্ক সব বয়সের নারীর ক্ষেত্রেই এটা ঘটতে পারে। যদিও বয়সভেদে নারী নির্যাতন বা হয়রানিতে ভোগার হার এ কিছুটা কমবেশি হয়। গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, অনূর্ধ্ব ২০ বছরের নারী/কিশোরীদের শতকরা ৭৬ ভাগ যৌন হয়রানির মতো নির্যাতনে ভোগেছেন, এই হার বয়স্ক নারীদের চেয়ে অনেক বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই হয়রানি/নির্যাতনে ভোগার হার যদিও কিছুটা কমে আসে, তবু দেখা যায় ত্রিশোর্ধ নারীদের মধ্যে এই হার ৪৪ শতাংশ। যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের ব্যাপারে নারী সাধারণত মুখ খুলেন না। হয়রানি/নির্যাতন মারাত্মক পর্যায়ে না পৌঁছালে নির্যাতিত নারী সাধারনত এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বলেন না। সমীক্ষা অনুযায়ী শতকরা ৫০ ভাগ নারীই মুখ বুঝে নির্যাতন সহ্য করেছেন, কোনো রকম প্রতিবাদ করেননি।
পপুলেশন সার্ভিস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত দেখা যায় যাত্রী ওঠানামার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামানো হয় না। ফলে নারীদের পক্ষে চলন্ত বাসে দৌড়ে বা ভিড় ঠেলে ওঠানামা করা দুরূহ ব্যাপার। এমনকি গর্ভবতী নারীদের জন্যও বাসের কর্মীরা কোনো সুযোগ করে দেয় না। টিকিট সংগ্রহ করার প্রয়োজন পড়লে সেখানে নারীদেরকে ভিড়ের কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বাসে ওঠানামার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় হেলপার কর্তৃক শরীরে স্পর্শ করার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। অনেক সময় ঠেলে নামিয়ে দেয় বা নামার জন্য সময় বেশি লাগলে কটূক্তি করে। সংরক্ষিত আসনের বাইরে অন্য কোনো আসনে বসতে চাইলে বা বসার প্রয়োজন পড়লে কটুবাক্য শুনতে হয়। দাঁড়িয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীদের মাঝে অনেকেই শরীর স্পর্শ করার মতো খারাপ আচরণ করে থাকে। অনেক বাসে/অটো/টমটমচালকেরা লুকিং গ্লাস দিয়ে খারাপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: যানবাহনে নারীদের ভোগান্তি নিয়ে আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক কথা হলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। নারীদের প্রতি সরকারসহ সবার দৃষ্টি অন্যরকম। যতদিন পর্যন্ত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হবে এসব সমস্যা সমাধান হবে না। রাজধানীর মহিলা বাস সম্পর্কে তিনি বলেন, দুই-তিনটা বাস নির্দিষ্ট স্থানে আসবে সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে যাবে এভাবে হয়না। ঢাকা শহরে নারীরা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় চলাফেরা করে না। শুধুমাত্র সকাল ৮টায় কিংবা বিকাল ৫টায় নারীরা ঘর থেকে বের হয়, সেটা কিন্তু নয়। সাধারণ মানুষ যেভাবে সব জায়গা থেকে বাসে উঠতে পারে নারীদের জন্যও সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত সবগুলো পয়েন্টে নারীদের জন্য আলাদা বাসের ব্যবস্থা না করা হবে ততদিন যানবাহনে চলাচলে নারীদের ভোগান্তি কমানো সম্ভব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী বলেন, নারীদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার বেড়েই চলছে। এসব বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়ানো দরকার। দিন দিন কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মহিলাদের জন্য যে কয়েকটা বাস আছে সেখানে নির্দিষ্ট কিছু কর্মজীবী নারী চলাফেরার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু নারীরাতো কিছু নির্দিষ্ট জায়গা থেকে চলাফেরা করছে না। তাই এসব বাসের সুযোগ যেন সব নারী পায় সে জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সময়গুলোতে চাপ বেশি থাকে সেই সময় যেন পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে নারীরাও বাসে উঠতে পারে সেজন্য তদারকি করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাইরে থেকে অনেক সুনাম আসলেও দেশে নারীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করুন হচ্ছে সেটা আমরা সবাই টের পাচ্ছি। মাসুদা এম রশিদ বলেন, নারীদের প্রতি সম্মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকারি কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না বলেই অন্যায় কার্যক্রম বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন স্থানে অভিযাগ বাক্সের ব্যবস্থা করতে পারে। যেন নারীরা তাদের প্রতিদিন চলাচলে সমস্যাগুলো সেখানে রাখতে পারে। আর সে অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিতে পারলে প্রতিনিয়ত নারীরা যে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সেটা অনেক কমে যাবে বলে মনে করছেন এই অধ্যাপক।