গলাব্যথা। জ্বর। ঢোঁক গিলতে কষ্ট। গালের নিচে টোপলার মতো ফুলে আছে টনসিল। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এই সমস্যা, বিশেষ করে শিশুদের, লেগেই থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বলা হয় টনসিল ফুলেছে। টনসিল ফোলা বা টনসিলের প্রদাহ কমবেশি সবাইকে ভোগায়। কিন্তু সব গলাব্যথাই যে এ কারণে হয়ে থাকে তা নয়। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে গলাব্যথার কারণ গলনালি বা ফ্যারিংসের প্রদাহ, যা অ্যালার্জি বা ভাইরাসজনিত। ঠান্ডা পানি খেয়ো না, টনসিল বাড়বে। টনসিল বারবার ফুললে তা অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়াই ভালো। কেউ বলেন, শরীরের একটা দরকারি জিনিস, ফেলে দিলে কোনো ক্ষতি হবে না তো? এ রকম নানা প্রশ্ন অভিভাবকদের মনে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের দেশে ঘন ঘন আবহাওয়ার পরিবর্তন, আর্দ্রতা ও উষ্ণতার কারণে ভাইরাস ও অ্যালার্জির প্রকোপ বেশি। এটাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে গলাব্যথার কারণ। পুষ্টির অভাব, ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সমস্যা হয় বেশি, তবে যেকোনো বয়সেই হতে পারে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান, ধুলাবালু, জ্বালানির ধোঁয়া, রাসায়নিক বস্তুর সংস্পর্শ, দীর্ঘকালের সাইনাসের সমস্যা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া—এসব নানাবিধ কারণ নিহিত থাকতে পারে বারবার গলাব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার পেছনে। গলাব্যথার সঙ্গে জ্বর থাকলে টনসিলের প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই জ্বর না থাকলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অ্যালার্জিক হওয়ারই আশঙ্কা বেশি। যে কারণেই হোক, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব গলাব্যথা এক সপ্তাহ পর এমনিতে সেরে যায়। বয়স ও রোগের মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসকের নির্দেশনামতো ওষুধ খেতে হবে। সব সময় অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে তা-ও নয়। তবে বারবার টনসিলের প্রদাহ বা গলনালির প্রদাহে আক্রান্ত হলে সেই শিশুর দিকে একটু নজর দিন। তার যত্ন নিন।
অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান পরিচালক, জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.