ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বের যে কোনো দেশকে হারানোর সক্ষমতা আছে বাংলাদেশের। দলের যে কোনো ক্রিকেটার সীমিত ফরমেটে হুঙ্কার দিয়ে বলতেও পারে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট এখনও হারাবোই বলার সাহস আসেনি টাইগারদের। একটা সময় মানসিকতা ছিল পাঁচ দিন পর্যন্ত খেলার। ধীরে ধীরে দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য ড্র করার। গেল দু’টি বছর অবশ্য টেস্ট জিততে চাই বা জয়ের জন্য মাঠে নামবো তা বেশ শোনা যাচ্ছে। টেস্টে ধীরে ধীরে জয় ও ড্র’র সংখ্যাও বাড়ছে। কাল থেকে মাঠে গড়াবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে (জেএসি) দুই দলই বেশ ভালোভাবে প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে গতকাল। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক জানিয়েছেন তার বাংলাদেশর কন্ডিশন নিয়ে ভয়ের কথা। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলই নয়, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেছেন কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের আশার কথা। এই অলরাউন্ডার বিশ্বাস করেন বোলিং সহায়ক উইকেট হলে ইংলিশদের ২০ উইকেট নেয়ার সামর্থ্য আছে বোলারদের। টেস্ট জিততে হলে অবশ্যই বোলিং সহায়ক উইকেট প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘আমাদের ঘরের মাঠে ব্যাটসম্যানদের জন্য ফ্ল্যাট উইকেট তৈরি করা হয়। যেখানে বোলাররা কোনো ধরনের সুবিধা আদায় করে নিতে পারে না। আমরা হোমে যখন খেলি, সাধারণত চেষ্টা করা হয় ফ্ল্যাট উইকেট বানানোর, যাতে করে ব্যাটসম্যানরা রান করতে পারে। যদি কখনো স্পিনার কিংবা পেসারদের সুযোগ দেয়া হয়, আমার মনে হয় আমাদের বোলারদের সামর্থ্য আছে ২০ উইকেট নেয়ার। এখন যদি ফ্ল্যাট উইকেট বানানো হয় সেক্ষেত্রে বোলারদের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যাবে।’ জেএসি স্টেডিয়ামে সাকিব আল হাসান ১২ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ২১ উইকেট। এর মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন। কিন্তু ওয়ানডেতে এবার এই স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৭৮ রান করেও জিততে পারেনি টাইগার। বিশেষ করে সাকিব আল হাসানের স্পিনকে পাত্তাই দেয়নি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। অবশ্য এজন্য মাঠে পড়া শিশিরই দায়ী ছিল বলে দাবি করেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। তাই ওয়ানডের সঙ্গে টেস্টের উইকেট কতটা পার্থক্য থাকবে বা টেস্ট উইকেট কেমন হতে যাচ্ছে বলতে পারলেন না সাকিব। তিনি বলেন, ‘উইকেট আমি দেখিনি, এটা কোচ, ক্যাপ্টেন, ম্যানেজমেন্ট ভালো বলতে পারবে।’ এছাড়াও দল বা টিম কম্বিনেশন নিয়েও সাকিব ভাবছেন বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন। তার ভাবনাতে শুধুই নিজের পারফরম্যান্স। তিনি বলেন, ‘দল নিয়ে চিন্তা করার দায়িত্বটা আমার নয়। আমার দায়িত্ব দলে অবদান রাখা। এটাই আমি ভালোভাবে করার চেষ্টা করবো। দল কী হলো বা কেমন হবে এই প্রশ্নটার উত্তর নির্বাচক, কোচ ও অধিনায়ককে বললে তারা ভালো উত্তর দিতে পারবে।’ মূলত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে স্পিন নির্ভর উইকেটই হচ্ছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এ কারণে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আরও একজন বাহাতি স্পেসালিস্ট স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এছাড়া দলে পার্টটাইম স্পিনাররাও বেশ কয়েকজন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান রুম্মান, মেহেদি হাসান মিরাজরাও স্পিনারের চাহিদা মেটাতে পারবে। তবে বাংলাদেশের অন্যতম শক্তি ধরা হয় সাকিব আল হাসানকেই। এই পর্যন্ত ৪২ টেস্টে সাকিবের শিকার ১৪৭ উইকেট। আর মাত্র তিনটি উইকেট পেলে দেশের প্রথম ১৫০ উইকেট পাওয়া টেস্ট বোলারের হবেন তিনিই। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে তার সামনে রয়েছে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.