কাবাডি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ে বিদায় নেয়া বাংলাদেশ দলকে এখনও তাড়া করে ফেরে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে শেষ মুহূর্তে ৩৫-৩২ পয়েন্টে হেরে যাওয়ার দুঃসহ স্মৃতি! কারণ তৃতীয় এই ম্যাচটি জিততে পারলে শেষ চারে খেলতে পারতো বাংলাদেশ। তাই ভারতের সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে দেশে ফেরা কাবাডি দলের কোচ, অধিনায়ক ও ম্যানেজারের চাওয়া দলের আরও উন্নত প্রশিক্ষণ ও নবীন খেলোয়াড় সৃষ্টি। কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস বলেছেন, ‘মূলত প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ভারত অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায়। যার ফলে খেলোয়াড়রাও মানসিকভাবে চাপে ছিল। তারপরও কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেই অনুসারে তারা খেলেও ছিল। প্রথম পাঁচ মিনিটে লোনা নিয়ে ১০-০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলাম আমরাই। বিরতিতে গিয়েছিলাম ১৫-১৫ সমান পয়েন্টে থেকেই। কিন্তু শেষ আড়াই মিনিট আগে টাইম আউট নিয়ে খেলোয়াড়দের বলেছিলাম, অন্তত এক পয়েন্টে হলেও জিতে ম্যাট ছাড়তে হবে। এরপরেই নাটকীয় ঘটনা ঘটে গেল। অধিনায়ক আরদুজ্জামান একটি রেইড দিতে গিয়ে ধরা খেল। শুরু হলো কোরিয়ার টার্নিং পয়েন্ট। সুপার রেইডে জ্যাং কুম লি তিন পয়েন্ট নিয়ে গেল। ফলে উল্টো লোনা নিয়ে আমাদের ব্যাকফুটে ফেলে দিল কোরিয়া। এই ভুলের জন্য আমাদের খেসারত দিতে হলো হেরে।’ দলের ঘাটতির দিকগুলো বলতে গিয়ে ভালোমানের রেইডারের অভাব অনুভব করেন সুবিমল, ‘দলে ভালো মানের রেইডার নেই। আগে জিয়া (বর্তমানে কোচ) কিংবা সেনাবাহিনীর মুসা ছিল। বোনাস পয়েন্টও তারা আনতে পারতো। কিন্তু এখন সেরকম রেইডার নেই। সেরকম ভালো রেইডারও তৈরি হচ্ছে না। মূলত দুর্বল রেইডিংয়ের কারণেই আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারিনি।’ দ্রুত ধাবমান থাইল্যান্ড, কোরিয়া ও কেনিয়া সম্পর্কে সুবিমলের মন্তব্য, ‘থাইল্যান্ড দুটি অনুশীলন ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে। আসলে থাইল্যান্ড, কোরিয়া ও কেনিয়া তাদের রাগবি দলকে কাবাডিতে এনেছে অনুশীলনের মাধ্যমে। তারা ভারতীয় কোচ নিয়ে গিয়ে অনুশীলন করিয়েছে দলকে। ভারতীয় জগমোহন কিলারু তো ইংল্যান্ডের কোচই ছিলেন। আর কেনিয়া নিয়মিত খেললে ভবিষ্যতে জায়ান্ট হবে। তাই আমাদের ভবিষ্যতের উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’ একই সুর অধিনায়ক আরদুজ্জামান মুন্সির কণ্ঠেও, ‘আসলে কোরিয়া আমাদের চেয়ে অনেক দুর্বল দল ছিল। গত এশিয়ান গেমসের আগে কোরিয়া আট মাস ভারতে থেকে কোচিং করেছে। তাই অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের হারটা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।’ ম্যানেজার নিজামউদ্দীন চৌধুরী পারভেজের কথা, ‘দেড় মাসের অনুশীলনে বিশ্বকাপে ভালো করাটা খুব কষ্টকর। এই স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে পদক জেতার ভাবনাটাও দুঃস্বপ্নের মতো। তারপরও আমরা সেখানে গিয়ে পাঁচটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। যার মধ্যে ইরান ছাড়া বাকি চারটিতেই জিতেছি। বিশ্বকাপে আসা দক্ষিণ কোরিয়া আট মাস অনুশীলন করেছে। আমরা লড়াই করেই হেরেছি।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.