রাজধানীর শাহআলী এলাকায় দুই বোনের ওপর হামলাকারী সেই বখাটে জীবন করিম ওরফে বাবু (২৪)কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব জানিয়েছে, ওই হামলার সঙ্গে বাবু জড়িত বলে স্বীকার করেছে। এছাড়াও ওই হামলায় ঘটনাস্থলে থাকা বাবুর কয়েকজন সহযোগী উস্কানি দেয়ার পাশাপাশি হামলায় অংশ নিয়েছিল। তাদেরও নাম জানা গেছে। র্যাব তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। গতকাল সকালে রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়ায় র্যাব-৪ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ কোম্পানি কমান্ডার মেজর আবু সাঈদ জানান, গত ১৯শে অক্টোবর সকালে শাহআলীর চিড়িয়াখানা রোডের বিসিআইসি কলেজের সামনে ফারিহা হাবীব মীম ও আসওয়াদ হাবিব জীমের ওপর বাবুসহ কয়েকজন বখাটে হামলা চালায়। দুই ভিকটিম স্থানীয় বিসিআইসি কলেজের এইচএসসি মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর ওই হামলা চালানো হয়েছে। ওই ঘটনায় আহতের বাবা বাদী হয়ে শাহআলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো জানান, ওই দুই ছাত্রী ইভটিজিং ও গুরুতর হামলার শিকার হলে ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে এই ইস্যুটি নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। স্থানীয় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য র্যাব প্রচেষ্টা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহআলী থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে ওই দুই বোনের ওপর হামলাকারী ও মামলার মূল আসামি জীবন করিম ওরফে বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরো জানান, গত ১৯শে অক্টোবর সকাল ১১টা ২০ মিনিটে কলেজ ছুটি হওয়ার পর বাসায় যাওয়ার জন্য চিড়িয়াখানা গোলচত্বরে অহনা রেস্টুরেন্টের পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই বোন। তখন অহনা রেস্টুরেন্টের কর্মচারী বাবু ওই দুই ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। তখন তারা প্রতিবাদ জানালে বাবু তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বাবুর সহযোগী আরো দুই তিনজন তাদের লাঠি দিয়ে মারধর করে। তখন লোকজন উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে আসামিরা তাদেরও হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। পরে কলেজের ছাত্রছাত্রী ও স্থানীয় লোকজন দুই বোনকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেন (নম্বর-১২)। ঘটনার পরপরই র্যাব-৪ জীবন করিম বাবুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে আসছিল। বাবুর বাবার নাম আবুল হাসেম। গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া থানার বসন্তপুর এলাকায়। ওই দুই ছাত্রীর ওপর হামলীকারী বাবু ছাড়া আর কেউ জড়িত আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আরো কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের নাম বলা যাবে না। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। অহনা হোটেলের আশপাশের ফুটপাথে কিছু ভ্রাম্যমাণ হোটেল আছে। সেখানে জড়ো হয়ে বখাটেরা মেয়েদের ইভটিজিং করে। এসব হোটেল উচ্ছেদ করা হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ওই ঘটনার পর থেকে র্যাবের গোয়েন্দারা এলাকাটি নজরদারিতে রেখেছে। বিষয়টি সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের উপ-পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান ও র্যাব-৪ এর (মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর) মো. সাজেদুল ইসলাম সজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.