গর্ভাবস্থা এবং সন্তানের জন্মদানের মতোই মায়েদের অতি স্বাভাবিক একটি অবস্থা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো। মায়ের দেহে এটি প্রকৃতিগতভাবেই উৎপন্ন হয়।
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো কেবল শিশুর জন্যই নয়, মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বেশ কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এসব ঘটনা ঘটে।
১. বুকের দুধ দেওয়া বন্ধ করলে স্তনে ইনভল্যুশন ঘটে। এই প্রক্রিইয়ায় স্তনের যেসব কোষ দুধ উৎপাদন করে তারা নিজেরাই নিজেদের শুষে নেয়। কারণ এসব কোষের আর দরকার হয় না বলেই ধরে নেয় দেহ। অর্থাৎ এ সময় দুধ উৎপাদনকারী কোষগুলো নিজেরাই নিজেদের খেয়ে ফেলে। এ সময় স্তনের কিছু চর্বিও নিঃশেষ হয়। এতে করে বিপাকক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ওজন কমতে থাকে।
২. যৌনকর্মের সময় স্তন স্প্রে করতে পারে। প্রেম নিবেদনের সময় দেহে ক্ষরিত হয় অক্সিটোসিন যাকে বলা হয় ভালোবাসার হরমোন। এই হরমোন বুকের দুধকে বেরিয়ে করে দিতে চায়। এটা শুধু যৌনতার সময়ই ঘটে যা নয়। শিশুকে কোলে নিলে বা এমনকি তাকের কথা মনে করলেও মনে সুখানুভূতির সৃষ্টি হয়। দেহের এই সহজাত আচরণ আসলে শিশুর ক্ষুধু মেটানোর জন্যই ঘটে থাকে। এ সময় স্তন থেকে দুধ এমনিতেই বেরিয়ে আসতে চায়।
৩. অক্সিটোসিন ক্ষরণের কারণেই বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এক ধরনের আনন্দ পান মায়েরা। আবার অনেক মা শিশুর প্রতি চরম বন্ধনের আবেগ অনুভব করেন। এমন কিছু আবেগের উদয় ঘটে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়। তাই অক্সিটোসিন কেবল যে শিশুর খাবার বেরোতেই সহায়তা করে তাই নয়, এটি খাওয়ানোর মাধ্যমে মায়ের মন উৎফুল্ল এবং আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে।
৪. শিশুজন্মের প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে বুকের দুধ দিতে গেলে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটা ঘটে দেহের সহজাত আচরণের কারণে। জন্মের পর মায়ের দেহে পরিবর্তন ঘটে। তার জরায়ুর আকার ও অবস্থান বদলে যায়। তখন দেহ নিজে থেকেই জরায়ুকে তার আগের অবস্থা ফিরিয়ে দিতে চায়।
৫. শিশুজন্মের কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত পিরিয়ড দারুণ যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। বুকের দুধ দেওয়ার সময় এমনটা হয়ে থাকে। তা ছাড়া জরুয়ু আগের স্থানে ফেরত আসার বিষয়টিও প্রভাব ফেলে।
৬. অনেক সময়ই বিশ্বাস হবে না বিষয়টি। স্তন পাথরের মতো শক্ত অনুভূত হবে। এর আকারও বড় হবে। অনেক সময়ই মনে হবে, এটি বোধহয় ফেটেই যাবে। সন্তান জন্মের পরের কয়েকদিন এমন মনে হবে। কিন্তু শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পর এটা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত আসবে।
৭. হতে পারে আপনার খুবই অস্বস্তিকর সময় যাবে। কিংবা খুবই আরাম বোধ করবেন। অন্য মানুষের সামনে শিশুকে বুকের দুধ দিতে হয়তো লজ্জাবোধ হবে। কিংবা বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক মনে হবে আপনার কাছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.