ক্ষমতায় থাকাটাই আওয়ামী লীগের সদ্য সমাপ্ত কাউন্সিলে মূল প্রতিপাদ্য বলে মনে করে বিএনপি। মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, রক্তঝরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকাটাকেই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মূল প্রতিপাদ্য বলে আমাদের মনে হয়েছে, যা দেশের জনগণও বিশ্বাস করে। এখানে সত্যিকারে গণতন্ত্র ও সুষ্ঠ নির্বাচনে মানুষের নির্ভয়ে ভোট প্রয়োগের শর্ত নিশ্চিত থাকতে হয়- যা তারা মনে প্রাণে ঘৃণা করে। এ বিষয়টি তাদের কাউন্সিলে দলের সভাপতির বক্তব্যে আমরা পেয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ও আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কমিটির নিকট আহবান জানাতে চাই, অবিলম্বে সবার মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি গঠন করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করুন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে যথাযথ উদ্যোগ নিন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে অধিকাংশ অংশগ্রহণ না করার মধ্যদিয়ে বুঝা যায় যে, তাদের একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে জায়েজ করতে কেউ আগ্রহী নয়। কাউন্সিলের পর থেকে তাদের নেতৃবৃন্দের কথাবার্তায় জাতি আশান্বিত হওয়া দূরে থাক, তাদের বক্তব্যে একনায়কতান্ত্রিক জিজ্ঞাসামূলক নির্দয় স্বৈরশাসনেরই প্রতিফলন পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি সেই পুরনো হুমকি-ধামকি, দেখে নেবো, নির্মূল করবো ইত্যাদি বিষাক্ত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য তাদের মুখে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই কাউন্সিলে বলেছেন, যে করেই হোক আওয়ামী লীগকে আবারো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাতে হবে এবং বিএনপিকে কোনোভাবে যেতে দেয়া হবে না। এ ধরণের বক্তব্যে এটাই প্রমাণিত হয়, তারা আগামী নির্বাচন নিজেদের অধীনে অনুষ্ঠিত করে জনমতের প্রতিফলনকে অগ্রাহ্য করে তারা জবরদখলকারী ভূমিকাই পালন করবে।
ক্ষমতাসীন দলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, উনি বলেছেন, বিএনপির নির্বাচনে না গিয়ে ভুল করেছিলো, তারা চোরাবালিতে হারিয়ে যাবে। তিনি তার নেত্রীর সুরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই পথে কথা বলছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বক্তব্য রাখছেন। একই ঐতিহ্য অনুযায়ী তিনি হাঁটছেন। বর্তমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনাকারীদের রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিয়ে প্রাণ-হরণ, অন্যায়ভাবে আটক, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিধি-নিষেধ জারি রেখে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ যে অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে, সেটার দিকে নজর দেয়ার জন্য আমি ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, এখনো দেশব্যাপী মিথ্যা মামলা গ্রেফতারের হিড়িক চলছে। আওয়ামী অঙ্গসংগঠনগুলোর উন্মুক্ত আক্রমনে এদেশের নারী সমাজ স্তব্ধ ও আতঙ্কিত। বর্তমানে এদের নিষ্ঠুর নির্যাতনে বিভীষিকার শিকার খাদিজা, মীমরা। মনে হচ্ছে, আওয়ামী অঙ্গসংগঠনগুলোকে নারী ও শিশুদের কোপানোর অবাধ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.