বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের সংঘাতময় রাখাইন রাজ্যে দেশটির সৈন্যরা রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা ও গ্রেফতার করছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করবার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। খবর বিবিসির। মিয়ানমারের নেতা অং সান সুচি অসন্তুষ্ট হতে পারেন এই আশংকায় বহু কূটনীতিক ও সাহায্য সংস্থাই এই পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলতে আগ্রহী হচ্ছেন না।
তবে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার চারজন বিশেষ প্রতিনিধি এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে গ্রেফতার, নির্যাতন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার কথা উল্লেখ করেছে। প্রথমবারের মতো বিষয়টি তারা ওই প্রতিবেদনে এই অভিযোগ তদন্তের জন্য মিয়ানমারকে জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছেন। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকটি চৌকিতে হামলায় নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হবার পর সে অঞ্চলে ত্রাণকর্মী ও সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অভিযান শুরুর পর থেকেই সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেখলেই বিনা প্রশ্নে গ্রেফতার করছে। ওই হামলার জন্যে মূলত রোহিঙ্গা মুসলমানদের দায়ী করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এ ঘটনার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী ব্যাপক দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। অসমর্থিত সূত্রগুলো বলছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়া হচ্ছে। অনেককে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।
যদিও সংঘাত শুরুর পর থেকে স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে, তারপরও বিবিসির কাছে সেনাবাহিনীর হত্যা ও অগ্নিসংযোগের বিষয়ে কথা বলেছেন একজন স্থানীয় বাসিন্দা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাসিন্দা বলেন, ‘তারা তরুণ বা কোনো ভদ্রলোককে দেখামাত্র প্রশ্ন ছাড়াই গ্রেফতার করছে এবং ভীষণভাবে মারছে। আমরা খুবই ভয়ে আছি।’
‘গত ৯ই অক্টোবর থেকে তারা এখন পর্যন্ত অনেকেই হত্যা করেছে, সঠিক সংখ্যা আমাদের জানা নেই। আমরা গ্রাম ছেড়ে একটি পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছি’ – বলছিলেন ওই বাসিন্দা।
এরই মধ্যে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন পীড়নের বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও নানাভাবে ফেসবুক-সহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পাচ্ছে।
তবে সেগুলো নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বৌদ্ধ এবং সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের সে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকারই করে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.