কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রীর দায়ের করা পর্নোগ্রাফি মামলায় ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোমিনুল ইসলামকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। কুষ্টিয়ার কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক রতন শেখ জানান, আসামি মোমিনুল ইসলাম বর্তমানে কারাগারে আছে। সে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ট্রাফিক পুলিশের টিআই-টু হিসেবে সর্বশেষ কর্মরত ছিলো। আদালত সূত্রে জানা যায়, পাবনার গোপালপুর গ্রামের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের এক ছাত্রীর দূরসম্পর্কের চাচা মোমিনুল ইসলাম। ২০১২ সালে ওই ছাত্রী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় আসামি মোমিনুল ইসলাম কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পূর্ব পরিচিত এবং দূরসম্পর্কের আত্মীয় হওয়ার সুবাদে আসামি মোমিনুল প্রায়ই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে যাওয়া-আসা করতো। ২০১২ সালের ৬ই জুন আসামি মোমিনুল ওই ছাত্রীকে কুষ্টিয়া শহরের একটি আবাসিক হোটেল কাম রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে কোকের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। পরবর্তীতে স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে মোমিনুল। ওই ছাত্রী বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে আসামি মোমিনুল। চলতি বছরের ২৯শে জানুয়ারি পারিবারিকভাবে ওই ছাত্রীর পাবনা বিদ্যুৎ বিভাগের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর সঙ্গে বিয়ে হয়। এ খবর জানতে পেরে আসামি মোমিনুল ধারণকৃত এসব অশ্লীল ছবি মোবাইলে ওই ছাত্রীর পিতা-মাতা, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং স্বামীর বন্ধু-বান্ধবের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় গত ৪ঠা এপ্রিল ওই ছাত্রীকে তার স্বামী ডিভোর্স প্রদান করে। বাধ্য হয়ে ওই ছাত্রী গত ১৯/৪/২০১৬ ইং তারিখে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষ আইনের ২০০৬-এর ৫৭/২ ধারায় আসামি মোমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৮। এ মামলায় আসামি মোমিনুল ইসলাম উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। গত ২৯শে অক্টোবর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি তদন্ত রবিউল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামি মোমিনুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করে আসামি মো. মোমিনুল ইসলামকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.