ডনাল্ড ট্রাম্পের ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ জয়ের পথ এখনও বেশ বন্ধুর, কণ্টকাকীর্ণ। কিন্তু কিছু ঘটনা ঘটলে তিনি জিতেও যেতে পারেন। সিএনএন চিহ্নিত করেছে ৬টি পথ, যেভাবে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যে ট্রাম্প শিবির থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে তাদের টার্গেটে আছে কোন কোন রাজ্য। প্রচারণার শেষ সপ্তাহে কলোরাডো, ফ্লোরিডা, আইওয়া, মেইন, মিশিগান, নিউ মেক্সিকো, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইয়ো, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন, ভার্জিনিয়া, নেভাদা ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে টিভি বিজ্ঞাপনে আড়াই কোটি ডলার খরচ করেছে ট্রাম্প শিবির। এ থেকে আঁচ করা যায় যে, অরিজোনা, জর্জিয়া, ইউটাহ ও টেক্সাসের মতো ঐতিহ্যগতভাবে রিপাবলিকান ঘেঁষা অঙ্গরাজ্যগুলোতে তিনি জিতবেন বলে ধরে নিয়েছেন। তাই সেখানে শক্তি ক্ষয় করার প্রয়োজন বোধ করছেন না। ট্রাম্প শুরু করেছেন যে ৪টি রাজ্যে অবশ্যই জিততে হবে, সেগুলোকে নিয়ে। এ ৪টি রাজ্য হলো ফ্লোরিডা, ওহাইয়ো, নর্থ ক্যারোলাইনা ও আইওয়া। এ চারটি রাজ্য, ঐতিহ্যগতভাবে রিপাবলিকান ঘেঁষা সব রাজ্য আর মেইনের সেকন্ড কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টে জিতলে ট্রাম্পের ইলেকটোরাল ভোট দাঁড়াবে ২৬০। আরও লাগবে ১০টি কলেজ। এক্ষেত্রে টার্গেট আছে, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন, ভার্জিনিয়া ও মিশিগান। এছাড়া নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও নিউ মেক্সিকো Ñ এ তিনটি ছোট রাজ্য থেকে তাকে দুইটিতে জিততে হবে। কিন্তু এ সবগুলোই হিলারির ঘাঁটি। আর জিততে হলে যে করে হোক এ রাজ্যগুলোতে ঢুকতে হবে। নিচে ছয়টি চিত্র দেয়া হলো, যেভাবে ট্রাম্প জিততে পারেন। একটি উপায় হতে পারে ২০১২ সালে মিট রমনির জেতা সবগুলো রাজ্য জিততে হবে তাকে। এর মধ্যে নর্থ ক্যারোলাইনাও আছে। একই সঙ্গে বারাক ওবামার জেতা রাজ্যগুলো যেমন ফ্লোরিডা, ওহাইয়ো, আইওয়া, নেভাদা ও নিউ হ্যাম্পশায়ারও জিততে হবে তাকে। এরপর আছে নেব্রাস্কা ও মেইনের দু’টি কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট। নিখুঁতভাবে এগুলো জিতলে তিনি পাবেন একেবারে ২৭০টি ভোট। হিলারি পাবেন ২৬৮টি। এ সমীকরণই ট্রাম্পের জয়ের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পথ। দ্বিতীয় উপায় হলো, কর্মজীবী শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের নীরব উত্থান। এটা ট্রাম্পের জন্য স্বপ্নের মতো ব্যাপার। কারণ, এতে করে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার মতো হিলারি ও ডেমোক্রেট ঘেঁষা রাজ্যও জিতে যেতে পারেন তিনি। সে হিসাবে, নেভাদা ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে অনায়াসে জিতবেন তিনি। আয়ত্তে থাকবে ফ্লোরিডা ও ওহাইয়ো। এই হিসাবে তিনি নর্থ ক্যারোলাইনার মতো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হারালেও, প্রয়োজনীয় কলেজ জিতে যাবেন! আরেকটি সম্ভাবনা হলো, যদি হিলারির ভোট চলে যায় গ্যারি জনসনের ঘরে। ট্রাম্পের প্রতি সন্তুষ্ট নন এমন অনেক রিপাবলিকানের ভোট প্রত্যাশা করছেন হিলারি। কিন্তু এসব রিপাবলিকান যদি লিবার্টেরিয়ান পার্টির গ্যারি জনসনকে ভোট দেন, তাহলে তিনটি রাজ্যে লাভ হবে ট্রাম্পের। এ তিনটি রাজ্য হলো নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও কলোরাডা। এখানে গ্যারি জনসন ভালোও করছেন। এগুলোই ট্রাম্পের জন্য যথেষ্ট। আফ্রিকান আমেরিকান ভোট কমে গেলেও, পরিস্থিতি ট্রাম্পের অনুকূলে চলে যাবে। পূর্বের নির্বাচনের চেয়ে এবার নর্থ ক্যারোলাইনা, ফ্লোরিডা ও জর্জিয়ায় আগাম ভোটে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা গেছে। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে ডেমোক্রেট সমর্থন বেশি। ফলে এসব রাজ্যে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার উপস্থিতি কমে গেলে লাভ হবে ট্রাম্পের। এমনকি তিনি মিশিগানেও ভালো করতে পারেন। কারণ, সেখানে বেশির ভাগ ডেমোক্রেটিক ভোট আসে ডেট্রয়েট ও ফ্লিন্টের মতো শহরের কৃষ্ণাঙ্গদের কাছ থেকে। যদি লাতিনোরা তেমন ভোট না দেন, তাহলেও পরিস্থিতি ট্রাম্পের প্রতি সহায়ক হবে। এমন লক্ষণ ইতিমধ্যে দেখাও যাচ্ছে। লাতিনো ভোটারদের ভোট নিয়ে অনাগ্রহের দরুন ট্রাম্প ইতিমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছেন অরিজোনা। ফ্লোরিডা, নেভাদা, কলোরাডো ও নিউ মেক্সিকোও হাতিয়ে নিতে পারেন। আর ফ্লোরিডা জিতলে নিউ হ্যাম্পশায়ারের কথা ভুলে গেলেও সমস্যা নেই। উত্তর পূর্বাঞ্চলে যদি ট্রাম্প সমর্থন বাড়াতে পারেন, তাহলেও তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে মেইনে জিতে যাবেন তিনি। পাবেন নিউ হ্যাম্পশায়ারও। এমনটা হলে তিনি মধ্য আয়ের মানুষদের কাছ থেকে আশাতীত সমর্থন পাবেন। আর জিতে নিতে পারেন ফিলাডেলফিয়া, তথা গোটা হোয়াইট হাউজ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.